দখলমুক্ত হচ্ছে কক্সবাজার সার্কিট হাউস এলাকার কোটি টাকার সরকারি জমি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
১৯ জুন কলাতলীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর এবার শহরের হিল ডাউন সার্কিট হাউস এলাকায় বেদখলে থাকা শতকোটি টাকার সরকারি জমি উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি তথ্যবহুল সংবাদ পরিবেশন করার পর জমি উদ্ধারের এ তৎপরতা শুরু হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ লক্ষ্যে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সদর উপজেলা ভূমি অফিসের কার্যালয় থেকে বেদখলে থাকা জমি সরজমিন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করা হয়।
তথ্য মতে, কক্সবাজার মহকুমায় অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও স্বাস্থ্য নিবাস প্রকল্পের জন্য তৎকালীন সরকার কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া সার্কিট হাউস এলাকা এবং কলাতলী এলাকায় প্রায় শত একর জমি অধিগ্রহণ করেন। কিন্তু অধিগ্রহণের বেশিরভাগ জমিই বেদখল রয়ে যায়। বিশেষ করে দক্ষিণ বাহারছড়া হিলডাউন সার্কিট হাউস এলাকায় খাস ও গণপূর্ত বিভাগের খতিয়ানভূক্ত শত কোটি টাকার জমিই বেদখল রয়ে যায়। অথচ এসব জমি দখলে থাকলে সরকারি বিভিন্ন অফিস স্থাপনের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের আবাসন সমস্যারও সমাধান করা যেত। কিন্তু দখলমুক্ত না হওয়ায় ওই জমিতে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে দখলদারা। সরকারি শতকোটি টাকার জমি বেদখল নিয়ে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে তথ্যবহুল সংবাদ প্রচার হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। চলতি মাসেই কক্সবাজার সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয় থেকে বেদখলকৃত স্থান পর্যবেক্ষণ ও দখলদারদের সাথে কথা বলেন। কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিল্লুর রহমান বলেন, জমির প্রমাণপত্র নিয়ে তহসিলদারকে সরজমিন পাঠানো হয়। তিনি একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তার রিপোর্টটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে, সে মতে কাজ করা হবে। তবে সার্কিট হাউস এলাকা যে সরকারি জমি প্রাথমিকভাবে আমরা সেটি নিশ্চিত হয়েছি। তিনি বলেন, শুধু সার্কিট হাউস এলাকা নয়, জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সরকারি অনেক জমিই বেদখল রয়েছে। খাস খতিয়ানের সব জমিই উদ্ধার করা হবে।
গণপূর্ত বিভাগের আইনজীবী ফরিদুল আলম বলেন, সার্কিট হাউস এলাকার কিছু অংশ ছাড়া সব জমিই বিএস-১ এবং গণপূর্ত ৬নং খতিয়ানভুক্ত। আবার আমাদের খতিয়ানভুক্ত অনেক জমি খাস খতিয়ানে চলে গেছে। মামলা করে প্রায় ১২ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের খতিয়ানভুক্ত জমি যারা দখল করে রেখেছে তাদের চিহ্নিত করে উচ্ছেদ করা হবে। ইতিমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশনাও এসেছে। জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, কউক প্রতিষ্ঠার আগে আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে বারবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পায়নি। এখন কউকের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে গণপূর্ত বিভাগের জমি সীমানা প্রাচীর ও কাটা তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে। ইতিমধ্যে যারা বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে তাদের নিজ উদ্যোগে সরে যেতে চিঠি দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাহিদ ইকবাল বলেন, সার্কিট হাউস এলাকায় গণপূর্ত বিভাগের জমি রয়েছে। খাস খতিয়ানের জমি বেদখলে কি না, সেটি জানা পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।