সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টি

হাটহাজারীতে বন্যায় প্রান্তিক কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো ও হাটহাজারি প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা। কৃষি বিভাগের হিসাবে ৬ হাজার ৪৮০ জন কৃষকের ৭ কোটি ১৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর কৃষি জমিতে আউশ ধান, আমন বীজ তলা, আমন ধান, গ্রীষ্মকালীন সবজি, অন্যান্য ফসলের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বন্যায় উপজেলার ১ হাজার ৬৬৩ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। তবে ৩৮৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার গড়দুয়ারা, ধলই, মেখল, ছিপাতলী, গুমানমর্দন, শিকারপুর, মির্জাপুর, বুড়িশ্চর ইউনিয়ন ও পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে কৃষকরা বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মামুন সিকদার জানান, বিগত কয়েক দিনের বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল জমির ফসল তলিয়ে গেছে। মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, হালদার জোয়ারে পানি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিভিন্ন সময়ে ফসলের ক্ষতি হলেও এবারের মতো ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি এই অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষক। কৃষকদের এই ভয়াবহ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা আসলেই কঠিন।

তিনি আরো জানান, যদি কৃষকদের মধ্যে কিছু আমন বীজ ও বিভিন্ন সবজির বীজ সরবরাহ করা যায় সেক্ষেত্রে কৃষকরা কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলেন মনে করেন এই কৃষিবিদ।

গুমারমর্দন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজিব বলেন, ‘এবারের বন্যায় আমার ইউনিয়নের প্রান্তিক মানুষের যে ক্ষতি হয়েছে সেটি সহজে কাটিয়ে ওঠার মতো না। পানিতে মানুষের পুরো বাড়িঘর ডুবে গেছে। নিচু এলাকায় বিশেষ করে জলে ভাসা জমিতে যেসব ফসলের আবাদ হয়েছে তার সবই এখন পানিতে তলিয়ে আছে। এছাড়া মানুষের পুকুর ও মাছের ঘের বন্যার পানিতে মিশে মৎস্য খাতেও ক্ষতি হয়েছে। সবজিবাগান, আমান চাষি, কৃষি খামারিরা বাগানের ক্ষতিও ব্যাপক। কৃষক নাজিম উদ্দিন জানান, কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতায় ও অনুপ্রাণিত হয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে গত বছর তুলনায় এই বছর চাষাবাদের পরিধি বৃদ্ধি করেছিলাম, কিন্তু টানা বর্ষণে বড় আর্থিক সংকটে পড়েছি। এখন কীভাবে এই ঋণ পরিশোধ করব বুঝতে পারছি না। সরকার যদি আমাদের প্রণোদনা দিয়ে সাহায্য করে, তাহলে আবারো ঘুরে দাঁড়াতে পারব।