রাজধানীর মুগদায় শ্বাসরোধ ও কিল-ঘুষিতে মমতাজ বেগম (৫০) নামে এক নারীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই নারীর ছেলে সোহানকে (১৪) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার ভোরের দিকে মুগদার দক্ষিণ মান্ডায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। মমতাজ বেগমের বড় ছেলে সোহাগ বলেন, আমরা তিন ভাই। আমি বাড্ডায় থাকি। মান্ডায় একটু দূরেই আমার আরেক ভাই থাকে। আমার ছোট ভাই সোহানকে নিয়ে আমার বাবা-মা দক্ষিণ মাণ্ডার ওই বাসায় ভাড়া থাকেন। আমার বাবা জলিল হাওলাদার সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। তিনি গত মঙ্গলবার মাগরিবের আজানের পর ডিউটিতে চলে যান। গতকাল বুধবার সকাল আটটার দিকে ডিউটি শেষ করে বাসায় এসে দেখেন মা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। পরে বাসার মালিকও আশপাশের লোকজন আসে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আমার বাবা ও ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি বলেন, আমার ছোট ভাই সোহান বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছে। পুলিশ আমাদের জানিয়েছে, সোহান টাকার জন্য মাকে হত্যা করেছে। আমাদের এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না, আমার ভাই এ কাজ করতে পারে। আমাদের বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ থানার সলোদী গ্রামে। মমতাজ বেগমের বাসার মালিক আরমান আলী বলেন, সকালে সোহান এসে আমাদের দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়ছিল। পরে আমি বের হয়ে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে? তখন সোহান বলল আমার মাকে কারা যেন মেরে ফেলেছে। পরে আমি গিয়ে দেখলাম মমতাজ বেগম রক্তাক্ত অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে রয়েছেন। তার মাথায় ও মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। এছাড়া তার গলায় একটি ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ছিল। পরে পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছোট ছেলে সোহানকে আটক করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ বলেন, সকালে আমরা খবর পেয়ে দক্ষিণ মান্ডার ১৩১০ মহিলা মেম্বারের গলিতে যাই। সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় এক নারীকে পড়ে থাকতে দেখি। পরে আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠাই। তিনি বলেন, আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই নারীর ছোট ছেলে সোহানকে আটক করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে সোহান জানায়, সে তার এক বন্ধুর মোটরসাইকেল চালিয়ে নষ্ট করে ফেলে। পরে সেই মোটরসাইকেল ঠিক করার জন্য তার মায়ের কাছে ৩৫০০ টাকা চায়। মমতাজ বেগম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সোহান তার মায়ের গলা চেপে ধরে। এরপর তার মা অচেতন হয়ে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। এ সময় সোহানের কিল-ঘুষিতে মমতাজ বেগমের মৃত্যু হয়। বর্তমানে সোহান আমাদের হেফাজতে রয়েছে।