চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় অপহৃত এক যুবকের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় অভিযুক্ত আরেক যুবককে পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে উত্তেজিত জনতা। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে শিবলী সাদিক হৃদয় (২০) এর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে উমংচিং মারমা নামের এক অভিযুক্তকে নিয়ে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। গত ২৮ আগস্ট রাতে কদলপুরের একটি মুরগির খামার থেকে হৃদয়কে অপহরণ করা হয়। সে উপজেলার ৮ নম্বর কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শফিক ড্রাইভারের ছেলে এবং কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। জানা গেছে, অপহরণের পর দাবি অনুযায়ী হৃদয়ের বাবা বান্দরবান এলাকায় ডুলাপাড়া নামক স্থানে গিয়ে দুইজন লোকের হাতে ২ লাখ টাকা তুলে দেন। মুক্তিপণ দেওয়ার পরও হৃদয়কে অপহরণকারীরা মুক্তি দেয়নি। ১৩ দিন পর তার খণ্ডিত মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত উমংচিং মারমাকে নিয়ে ফেরার পথে উত্তেজিত জনতার রোষানলে পড়ে। তারা ওই যুবককে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হন। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। হৃদয়ের মা নাহিদা আকতার বলেন, ছেলেকে অপহরণের পর আমার স্বামীর মোবাইলে ছেলে ফোন করেছিল। ছেলে বলেছিল, তাকে গাড়িতে করে কয়েকজন লোক নিয়ে যাচ্ছে। এরপর আবার মোবাইলে ফোন দিয়ে তারা ১৫ লাখ টাকা চায়। তাদের বুঝিয়ে ২ লাখ টাকায় রাজি করানো হয়। তাদের কথামতো টাকা দিয়েও ছেলেকে ফেরত পাইনি। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, প্রায় ৩ ঘণ্টা হেঁটে দুর্গম কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহৃত হৃদয়ের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই অপহরণের ঘটনায় কয়েকদিন আগে দুইজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। গত রোববার উমংচিং মারমা নামে আরো একজনকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল সোমবার ভোরে অভিযানে যায় পুলিশ। তিনি আরো বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ফেরার পথে পঞ্চপাড়া গ্রামবাসী অবরোধ সৃষ্টি করে। উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি থেকে অভিযুক্ত উমংচিং মারমাকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে। এ সময় তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়।