শেরপুরের নকলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী দ্বারা পরিচালিত ক্ষুদে ডাক্তারদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিডি. ডা. এবি মো. শামছুজ্জামান। গতকাল পৌরশহরের খইড়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে ডাক্তারদের কার্যক্রম পরিদর্শন করা হয়। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক, সহকারী শিক্ষা অফিসার পার্থ পাল, স্যানেটারি ইন্সপেক্টর হাসান ফেরদৌস আলম, খইড়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের দাতা সদস্য একেএম রইজ উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক সেলিম হোসেন, সহকারী শিক্ষক লাইলী বেগম, পারুল বেগম, ফেরদৌস বেগম ও আজিমুন নাহার, নকলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূর হোসাইনসহ নেতারা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদে ডাক্তার দ্বারা সব শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কার্যক্রম চলবে।
তিনি আরো জানান, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গঠিত ক্ষুদে ডাক্তারদল তাদের জন্য নির্ধারিত শ্রেণির সব শিক্ষার্থীর ওজন, উচ্চতা ও দৃষ্টিশক্তি পরিমাপসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে তা স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফরমে লিপিবদ্ধ করে রাখে। খইড়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম হোসেন জানান, নির্ধারিত কর্মসূচির বাহিরেও শিক্ষার মানোন্নয়নে ক্ষুদে ডাক্তারদের বিভিন্ন কাজে লাগানো হয়। যেমন- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব ছাত্রছাত্রীসহ অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য শ্রেণিকক্ষে আগাম ঘোষণা দেয়া, ঝরে পড়া ছেলেমেয়েদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে তাদের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীর সাথে কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করানো, বিভিন্ন বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা যেমন- ভালোভাবে হাত ধোয়া, নিয়মিত নখ কাটা, হাঁচি-কাশি দেওয়ার নিয়ম কানুন ও দাঁত ব্রাশসহ বিভিন্ন বিষয়ের কৌশল ব্যবহারিক প্রদর্শনীর মাধ্যমে উপস্থাপন করাও ক্ষুদে ডাক্তারদের কাজ বলেও তিনি জানান।
ক্ষুদে ডাক্তারদের মূল দায়িত্বগুলো- ফ্লিপচার্ট থেকে নির্ধারিত শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য বার্তা পড়ে শোনানো, কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে কৃমিনাশক ওষুধ সেবনে সক্রিয় অংশগ্রহণ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ (ওজন, উচ্চতা মাপা ও দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা করা)। এছাড়া স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন দিবস উদযাপনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস, ম্যালেরিয়া দিবস, বিশ্ব জলাতংক দিবস, হাত ধোয়া দিবস ও মীনা দিবস উদযাপন।
ক্ষুদে ডাক্তারদের জন্য নির্ধারিত কার্যক্রমের বার্ষিক পঞ্জিকা অনুযায়ী জানা গেছে তাদের কাজগুলো হলো- জানুয়ারি মাসে পুষ্টিহীনতা ও জলাতংক বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা; ফেব্রুয়ারিতে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও জলাতংক; মার্চে কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও অসংক্রামক রোগ; এপ্রিলে কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করানো, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বিশ্বস্বাস্থ্য দিবস উদযাপন, ম্যালেরিয়া দিবস উদযাপন (শুধুমাত্র ম্যালেরিয়া অধ্যুষিত জেলাসমূহে); মে মাসে পুষ্টিহীনতা ও জলাতংক, জুনে অসংক্রামক রোগ ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা; জুলাই মাসে কৃমি নিয়ন্ত্রণ; আগস্টে পুষ্টিহীনতা ও জলাতংক, সেপ্টেম্বরে কৃমি নিয়ন্ত্রণ, বিশ্ব জলাতংক দিবস উদযাপন ও মীনা দিবস উদযাপন; অক্টোবর মাসে কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করানো, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উদযাপন; নভেম্বরে পুষ্টিহীনতা ও অসংক্রামক রোগ; ডিসেম্বর মাসে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা।