ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নাসরিন হত্যা মামলা

গ্রেপ্তার হয়নি মূল আসামি

গ্রেপ্তার হয়নি মূল আসামি

সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর বান্ধবী নাসরিন হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হলেও মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ। এ নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর রাতে সদর উপজেলার সয়দাবাদ পুনর্বাসনের বন্ধুর বাবা পটলের ফাঁকা বাড়িতে বান্ধবী নাসরিনকে নিয়ে যায় রোমান। তার সঙ্গে ছিল তার আরো ৩-৪ জন বন্ধু। রাতভর সেখানেই চলে ইয়াবার আড্ডা। এ আড্ডায় নাকি নারসিনকে হত্যা করে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরদিন ভোরে দুই বন্ধু মোটরসাইকেলের মাঝখানে মৃত নাসরিনকে বসিয়ে নিয়ে যায় সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। মর্গের সামনে মরদেহ ফেলে রেখে রোমান তার বান্ধবীর বাবাকে মৃত্যুর সংবাদ জানায় মোবাইলে। পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ওই হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে এবং তাদের বন্ধু আশ্রয়দাতা আকাশকে গ্রেফতার করে। নিহত নাসরিন (১৯) সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার মাছুমপুর মধ্যপশ্চিমপাড়া মহল্লার শ্রমিক নাসির উদ্দিনের মেয়ে। স্বামীর সংসার ভেঙে যাওয়ায় ৩ বছর বয়সি ছেলেকে নিয়ে নাসরিন দুই বছর ধরে বাবার বাড়িতেই থাকত। এ অবস্থায় ওই পুনর্বাসনের বাসিন্দা রোমান (২৫) ও নোমানের (২৪) সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রোমান মাঝেমধ্যেই নাসরিনকে তাদের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যেত। এ অবস্থায় ওইদিন বিকালে নিজের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নাসরিনকে নিয়ে যায় রোমান। ওইদিন গভীর রাতে রোমান তার বান্ধবীর বাবাকে জানায় নাসরিন পাগলামি করছে এসে আপনি নিয়ে যান এবং সকালে যাওয়ার কথা বলে ফোন রেখে দেয় নাসরিনের বাবা। নিহতের বাবা নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক থাকায় মেয়েকে রোমানের সাথে যেতে দিয়েছিলাম। নিজের বাড়িতে না নিয়ে ওই ফাঁকা বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে যায় রোমান। সেখানে রাতভর তার অন্যান্য ছেলে বন্ধুদের নিয়ে ইয়াবা সেবনের আড্ডায় মেতে ছিল। এক পর্যায়ে তারা সবাই মিলে মেয়েকে মারধর করে হত্যার পর লাশ ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিল। তারা হয়তো মেয়েকে দলবেঁধে ধর্ষণও করেছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। এ বিষয়ে থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আশ্রয়দাতা আকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার আগে গভীর রাতে মোটরসাইকেলে করে নাসরিনকে নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হয় রোমান। সাথে আরো ৩-৪ জন বন্ধু ছিল। ঘরের মধ্যে তারা সবাই এক সাথে ইয়াবা সেবন করে। একপর্যায়ে নাসরিনকে নিয়ে রোমান আলাদা একটি কক্ষে ঢুকে পড়ে। অন্যরা ঘরের মধ্যেই ইয়াবা সেবন করতে থাকে। ভোরের দিকে আকাশসহ অন্যরা রোমানের কক্ষের ভিতর নাসরিনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে। অভিযুক্তরা এলাকায় ছিচকে চোর ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। এ ব্যাপারে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেছেন তার বাবা। এ মামলায় জড়িতদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান চলছে এবং ২-৪ দিনের মধ্যে তাদের গ্রেফতার সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত