আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্রে যোগ হয়েছে মাঝগ্রাম-ঢালারচর রেলপথ যা পাবনার উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে। ৬টি উপজেলা সংযুক্ত ৭৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার রাস্তার ১১টি স্টেশনের এ রেললাইন তৈরির ফলে পাবনা জেলার কৃষি, শিল্প, ব্যবসায় ব্যাপক সুবিধা পাচ্ছে পাবনাবাসী। ঢালারচর রেললাইন মানিকগঞ্জ হয়ে রাজধানীর সাথে সংযুক্ত করার দাবি পাবনাবাসীর।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পাবনার পাকশি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯১৪ সালে পদ্মা নদীর উপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালু হলে সেই সময়ে দাবি উঠে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত একটি লিংক রোড রেললাইনের। ব্রিটিশরা ওই দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতিও দেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি আর পরে বাস্তবায়ন হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পাবনাবাসীর দীর্ঘ দিনের এ দাবি বাস্তবায়নে ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেল প্রকল্প হাতে নেয়। সে সময় পাবনায় নদীকেন্দ্রীক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠলে স্থলপথে যাতায়াত ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করতে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে নগরবাড়ী পর্যন্ত রেলপথের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে পাবনা শহরের টাউন হল মুক্তমঞ্চ মাঠে এক ভিডিও কনফারেন্সে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা পাবনার মানুষকে প্রতিশ্রুতি দেন আগামীতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এ রেলালাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পাবনাবাসীর প্রাণের দাবি এ রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। এ সময় নকশার কিছুটা পরিবর্তন এনে রেলপথটি ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে বেড়া উপজেলার ঢালারচর পর্যন্ত নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটির বৈঠকে এ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৯৮২ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে ২ ফেব্রুয়ারি পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেল পথের উদ্বোধন করেন। ঢালারচর-পাবনা-ঈশ্বরদী রেলরুটে পূর্ণাঙ্গ ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় উত্তর জনপদের আমূল পরিবর্তন আসছে বলে জানান স্থানীয়রা। ব্যবসা-বাণিজ্যে গুণগতমানের পরিবর্তন ঘটছে। রেলপথে পণ্য পরিবহনে স্বল্প খরচের কারণে এ এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে।