প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ‘বন্দুক বাহাদুরের’ ‘বাহাদুরি’!

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের শাহেদুজ্জামান বাহাদুর। যাকে এলাকাবাসী ‘বন্দুক বাহাদুর’ হিসেবে চিনেন। আর এই ঘটনার নেপথ্যে হচ্ছেন শাহেদুজ্জামান বাহাদুর নামের কথায় কথায় প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া কিছু ভিডিও এবং ছবির সূত্র ধরে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদকের হাতে আসা ভিডিও এবং ছবিতে দু’নলা লম্বা বন্দুক হাতে একটি সুপারি বাগানে একজনকে ধাওয়া করছেন শাহেদুজ্জামান বাহাদুর নামের এই ব্যক্তি। যার এক পর্যায়ে যিনি মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছেন তাকে গালিগালাজ করছেন। অপর একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একটি গ্রামের বাজারে পিস্তল হাতে হেঁটে যাচ্ছেন একই ব্যক্তি। এসব ভিডিও এবং ছবির সূত্র ধরে নিশ্চিত হওয়া গেছে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শনকারী ব্যক্তি শাহেদুজ্জামান বাহাদুর। তিনি রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম গোয়ালিয়া পালং এলাকার বাসিন্দা। আর সুপারির বাগানের ভিডিওটি গত ২৫ সেপ্টেম্বরে দুপুরের আর পিস্তলের ছবিটি একই দিন বিকালে ধারণ করা।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এক সময় ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত মো. শাহেদুজ্জামান বাহাদুর গত ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনের আগে বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। নৌকা প্রতীকের কাছে হেরে গেলেও তৈরি করেন একটি নিজস্ব বাহিনী। রোহিঙ্গা যুবকদের এনে এলাকায় নানা অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এলাকার মানুষজনকে হুমকি ধমকি, মামলায় জড়ানোসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে অস্ত্র হাতে প্রায়শ প্রকাশ্যে ঘোরে বেড়ান তিনি। এর আগে ২০২০ সালের ১৪ জুলাই অস্ত্রের মহড়ার ছবি ভাইরাল হয়ে উঠে। ওই সময়ের উত্তেজিত জনতা তার বসত-বাড়ি ঘেরাও করলে পুলিশ বাড়ি থেকে অস্ত্র ও ৬২টি রাউন্ড গুলি উদ্ধার করলেও কৌশলে বাহাদুর পালিয়ে যায়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ওই ঘটনায় মামলা হয়নি। কথিত আছে, আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার সুপারিশে রক্ষা পান তিনি। ২৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে ধারণ করা সুপারি বাগানের ভিডিও’র বিষয় এলাকার ভুক্তভোগী মোহাম্মদুল হক জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে ৭ থেকে ৮ জন স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীসহ শাহেদুজ্জামান বাহাদুর লম্বা বন্দুক নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে মারধর করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ওবাইদুল হক ও আবু তাহেরকেও মারধর করে তারা। এ সময় ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। তাদের চিৎকারে স্থানীয় জনতা এসে তিনজনকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ১১ অক্টোবর রামু সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে রামু থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ওবাইদুল হক জানান, কোনো কারণ ছাড়া তাকেও মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে মারধর করে। প্রায় সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা, জমি জবর-দখল, মানুষকে ভয় প্রদানে এলাকায় বন্দুক বাহাদুর আতঙ্ক বিরাজ করছে।