ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গাজায় রাতভর ইসরাইলের হামলা

আরো ৫৫ জন নিহত

আরো ৫৫ জন নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় রাতের আঁধারে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এই হামলায় কমপক্ষে ৫৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ধ্বংস হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি। গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের বরাত দিয়ে গতকাল এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গাজায় রাতভর বিমান হামলায় অন্তত ৫৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা আরো তীব্র হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই হামলা হয়। ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, এই হামলা সীমান্তের আশপাশে থাকা ইসরাইলি বাহিনীর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। তিনি গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আরো দক্ষিণে সরে যেতে বলেছেন, বিশেষ করে যারা গাজা শহরে বসবাস করছেন।

ইসরাইলের হামলায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত : ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, রাতব্যাপী চালানো তাদের বিমান হামলায় হামাসের এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। নিহত ওই কমান্ডার হামাসের রকেট বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা ছিলেন বলে জানিয়েছেন হাগারি। তিনি বলেছেন, আমরা গাজা উপত্যকায় হামলা থামাচ্ছি না। রাতভর চালানো হামলায় হামাসের রকেট বাহিনীর উপ-কমান্ডারসহ বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন।

শিশুর পায়ে নাম লিখে রাখছেন গাজার বাবা-মায়েরা : ইসরাইলিদের হামলায় নিহত স্বজনের জন্য কাঁদছেন এক নারী। ইসরাইলের বিমান হামলায় মারা যেতে পারেন নিজে, আবার মৃত্যু হতে পারে শিশুসন্তানেরও। যদি দুর্ভাগ্যবশত এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রে পরিচয় জানার জন্য বা তাদের শনাক্ত করার জন্য, নিজ সন্তানের পায়ে নাম লিখে রাখছেন গাজা উপত্যকার অনেক বাবা-মা। গতকাল এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছেন গাজায় সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সাংবাদিকরা। গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল বালাহর আল আকসা শহীদ হাসপাতালে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মৃত শিশুদের পায়ে তাদের নাম লেখা রয়েছে। গত শনিবার থেকে শুরু করে গতকাল রোববার পর্যন্ত ওই এলাকায় টানা বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। ভিডিওতে আরো দেখা গেছে, চারটি শিশু যারা বিমান হামলায় নিহত হয়েছে, তাদের পায়ে আরবি অক্ষর দিয়ে তাদের নাম লেখা রয়েছে। নিহত ওই চার শিশুকে হাসপাতালের মর্গে রাখা স্ট্রেচারে শুইয়ে রাখা হয়েছে। ওই শিশুদের মা-বাবাও কি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন কি না, সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়।

হিজবুল্লাহর তীব্র হামলা : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাসের সাথে যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরাইলের উত্তর সীমান্তে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর তীব্র হামলার মুখে সীমান্ত এলাকার আরো হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে ইসরাইল। দুই সপ্তাহের বেশি সময় আগে হামাসের সাথে ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর উত্তর সীমান্ত উত্তপ্ত হওয়ায় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার এই উদ্যোগ নিয়েছে ইসরাইল। গতকাল রোববার নতুন করে উত্তর সীমান্তের আরো ১৪টি গ্রামের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ইসরাইলিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

গাজায় ত্রাণবাহী আরো ১৭ ট্রাক : দখলদার ইসরাইলের বিমান বাহিনীর নির্বিচার হামলায় বিপর্যস্ত গাজাবাসীর জন্য পাঠানো আরো ১৭টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজার ভেতর প্রবেশ করেছে। গতকাল মিশরের রাফাহ ক্রসিং থেকে গাজার ভেতর ঢোকে ট্রাকগুলো। এর আগে গত শনিবার যুদ্ধ শুরুর পর বিভিন্ন ত্রাণ নিয়ে গাজায় যায় ২০টি ট্রাক। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল রোববার যেসব ট্রাক গাজায় গেছে, সেগুলোর মধ্যে অতিপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে। এদিন কোনো খাদ্য বা জ্বালানি পাঠানো হয়নি। মিশর থেকে পণ্যবাহী বড় এ ট্রাকগুলো রাফাহ ক্রসিং অতিক্রম করে মিশর ও ফিলিস্তিনি গেটের মাঝামাঝি যায়। এরপর সেখানে আসে ফিলিস্তিনি ট্রাক। এরপর ওই ট্রাকগুলোয় ত্রাণগুলো বোঝাই করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত