ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন

অক্টোবরে ৪২৯ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৭

অক্টোবরে ৪২৯ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৭

গত অক্টোবর মাসে ৪২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩৭ জন নিহত, ৬৮১ জন আহত হয়েছেন। একই সময় রেলপথে ২৯টি দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত, ১৫৫ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ৬টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত, আহত দুই এবং দুইজন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৪৬৪টি দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত এবং ৮৩৮ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ১৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৪ জন নিহত, ৭৬ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩০.৫৩ শতাংশ, নিহতের ৩৩.৫৬ শতাংশ ও আহতের ১৭.৭১ শতাংশ।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪১ জন নিহত ও ১৩২ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে, ২৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ৮৪ জন আহত হয়েছেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর স্বাক্ষর করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে চারজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১২০ জন চালক, ৩৬ জন পথচারী, ২৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫২ জন শিক্ষার্থী, তিনজন শিক্ষক, ৬৮ জন নারী, ৩০ জন শিশু, দুইজন সাংবাদিক, দুইজন চিকিৎসক, একজন আইনজীবী, একজন প্রকৌশলী এবং ১০ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৫৬৪টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৪.৮২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩.৯৩ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ২১.৮০ শতাংশ বাস, ১৮.৬১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩.০১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২.৬৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫.১৪ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫০.৮১ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৭.০১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৫.১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১৬.৫৫ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং ০.৪৬ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ওই মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৬.১৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২২.১৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩০.৭৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৯.০৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.৩৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৪৬ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে। পর্যবেক্ষণে অক্টোবর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে বলা হয়েছে: ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি ব্যাপক বৃদ্ধি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল, সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা। রাতের বেলায় ফগ লাইটের অবাধ ব্যবহার, চলতি বর্ষায় সড়ক মহাসড়কের ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি ও অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সুপারিশ :

মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান, রাতের বেলায় বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকদের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা, রাতের বেলায় চলাচলের জন্য জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা, চলতি বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার মাঝে সৃষ্ট ছোট-বড় গর্ত দ্রুত অপসারণ করা, গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত