‘তোমার বাপ আমার বিচার মানেনি, তাই তোমার নাগরিক অধিকার আমি দেব না, পারলে আমার নামে মামলা করো। নাগরিক অধিকার ওইটা (বেত দেখিয়ে) দেব যে। এই বলে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান। এ সময় চেয়ারম্যান ওই ছাত্রকে উদ্দেশ্যে করে অশ্লীল গালমন্দও করেন। গত বৃহস্পতিবার রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটান ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো। চেয়ারম্যানের মারধরে আহত তৌহিদুল ইসলাম (২০) জন্মবিন্ধন সনদ নেয়ার জন্য পরিষদের গিয়ে এ হামলার শিকার হন। তৌহিদুল ইসলাম রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আমতলিয়াপাড়া গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে এবং রামু সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। হামলার শিকার তৌহিদুল ইসলামের মা খুরশিদা বেগম জানান, ১৫ দিন আগে ছেলেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জন্মনিবন্ধন সনদ নেয়ার জন্য ছেলেকে (তৌহিদ) পরিষদে পাঠান। কিন্তু বেশ কয়েকবার বিভিন্ন অজুহাতে ছেলেকে জন্মনিবন্ধন করার সুযোগ না দিয়ে ফেরত পাঠান। গত বুধবার, ৮ নভেম্বর আবারো জন্মনিবন্ধন সনদ সংগ্রহের জন্য গেলে চেয়ারম্যান ছেলের সকল কাগজপত্র নিয়ে রেখে দেয় এবং পরদিন যেতে বলে। চেয়ারম্যানের কথা অনুযায়ী পরদিন গত বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান ছেলের পরিচয় জানতে চান। এ সময় পিতার না বলার সঙ্গে চেয়ারম্যান চরম উত্তেজিত হয়ে অশ্লীল গালমন্দ শুরু করে এবং এক পর্যায়ে চৌকিদারকে দিয়ে বেত এনে ছেলে পিটাতে শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে ছেলে মেঝেতে পড়ে গেলে চেয়ারম্যান ছেলে তৌহিদের কোমরেও পা দিয়ে আঘাত করে। পরে তৌহিদের সঙ্গে থাকা তারেকুল ইসলাম, ফাইসাল ও আবদুল হক নামের ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চেয়ারম্যানের উত্তেজিত হওয়া, গালমন্দ করা ও মারধরের একটি অডিও রেকর্ডও এ প্রতিবেদকের কাছে দিয়েছেন হামলার শিকার তৌহিদের মা খুরশিদা বেগম। ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের এ অডিও রেকর্ডে খুরশিদা বেগমের অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। তৌহিদের মা আরো জানান, বিষয়টি তিনি বৃহস্পতিবার, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফাকে অবহিত করেন। এসময় ইউএনও রামু থানার ওসি’র সাথে কথা বলেন এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর রাতে তিনি এ ঘটনায় রামু থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো ফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনোভাবেই ফোন রিসিভ করেননি। ক্ষুব্দে বার্তা পাঠিয়েও মিলেনি কোনো উত্তর। রামু থানার ওসি মো. আবু তাহের দেওয়ান জানান, এ সংক্রান্ত লিখিত এজাহার পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।