আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি ইশতেহারে আদিবাসীদের অধিকারের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহের আদিবাসী সংগঠনসমূহের ঐক্য পরিষদ (ইউসিজিএম)। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির নেতারা এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সারা বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি আদিবাসী রয়েছে এবং বাংলাদেশেও কমপক্ষে ৫০টি বা তার অধিক সম্প্রদায়ের ৫০ লাখের বেশি আদিবাসী জনগোষ্ঠী বসবাস করে। যাদের শতকরা ৭৫ শতাংশ মানুষ সমতল এলাকার বাসিন্দা এবং বাকি ২৫ শতাংশ পার্বত্যাঞ্চল তথা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি এই তিনটি পার্বত্য জেলার অধিবাসী। সমতল এলাকার আদিবাসীরা দেশের মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু জেলা বাদে প্রায় সব জেলাতেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করে আসছে। তবে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা, উত্তর বঙ্গের বরেন্দ্র অঞ্চল, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার প্রভৃতি জেলাতে বেশি সংখ্যক আদিবাসীর বাস দেখা যায়। এ দেশে আমরা যারা নিজেদের আদিবাসী হিসাবে দাবি করি, আমাদের নিজস্ব ভাষা আছে, পোশাক-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য রয়েছে। তারা আরো বলেন, বর্তমান সরকার এ দেশের আদিবাসীদের জন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আইন ২০১০ প্রণয়ন করে পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩ (ক) ধারায় সংযোজন করেছে। যা আদিবাসীদের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা ছিল। উক্ত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এ দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারা বলেন, কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে তাতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। যার মাধ্যমে তাদের অধিকার ও অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার ও অস্তিত্ব রক্ষায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে আদিবাসী অধিকারের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান তারা। এ সময় তারা সংবিধানে আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা, পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনসহ ১১টি দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে ইউসিজিএমের সভাপতি অজয়, মহাসচিব অরণ্য ই চিরান, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কলামিস্ট সঞ্জীব দ্রং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ কামালসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।