ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যাত্রী কল্যাণ সমিতি

ইশতেহারে নিরাপদ সড়ক ও স্মার্ট গণপরিবহনের অঙ্গীকার চাই

ইশতেহারে নিরাপদ সড়ক ও স্মার্ট গণপরিবহনের অঙ্গীকার চাই

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের নির্বাচনি ইশতেহারে নিরাপদ সড়ক ও স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গীকার রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলয়াতনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিরাপদ সড়কের বিষয়গুলো নির্বাচনি ইশতেহারে থাকুক, তাহলে জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার করলেও নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে অগ্রগতি তেমন দৃশ্যমান নয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরাপদ, সাশ্রয়ী, স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াতের মতো স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা নেই। অপরিচ্ছন্নতা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নোংরা আবর্জনায় ভরপুর পরিবহনগুলোতে প্রতিদিন যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছে নগরবাসী। যানজট-জনজোটে আটকা পড়ে প্রতিদিন ক্ষয় হচ্ছে কর্মক্ষম মানুষের লাখো কোটি টাকার মহামূল্যবান শ্রমঘণ্টা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য, সিটিং সার্ভিসের নৈরাজ্য, গণপরিবহনগুলোকে মুড়িরটিন বানিয়ে ইচ্ছেমতো যাত্রী হয়রানি চলছে। ভয়াবহ দূষণের শিকার হচ্ছে নগরবাসী। তিনি বলেন, সদরঘাট থেকে গাবতলীর আমিনবাজার পর্যন্ত ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে নগরীর যাত্রী সাধারণ এখন লক্কড়-ঝক্কড় বাসমালিকদের ইচ্ছের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। সরকার বাসমালিক, শ্রমিকের স্বার্থে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গণপরিবহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব ফোরামে মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে রাখা হলেও যাত্রী প্রতিনিধি রাখা হয় না। ফলে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আজ বেপরোয়া। এহেন যাত্রী হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে ক্ষমতায় এলে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি। যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে প্রতি বছর দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জনের প্রাণহানি ঘটছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ আহত হচ্ছে। ৮০ হাজার মানুষ পঙ্গু হচ্ছে। এমন ভয়াবহ মহামারির কবল থেকে দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি ইশতেহারে তুলে ধরার দাবি জানান তিনি। এ সময় অন্য বক্তারা বলেন, বর্তমানে সারাদেশে বাস নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়েছে। ইজিবাইক, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এখন দেশের প্রধান বাহন হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

ব্যয়বহুল, সড়ক নিরাপত্তায় ঝুঁকিপূর্ণ, যানজট তৈরির প্রধান উৎস এসব ছোট ছোট যানবাহন স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে বেমানান। ব্যাপক যানজটের কবল থেকে রাজধানী ঢাকাকে মুক্ত করতে প্রশাসনের বিকেন্দ্রিকরণ জরুরি। এছাড়াও সংসদ সদস্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে, ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে কী কী পদক্ষেপ নেবেন, তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে আলাদা আলাদাভাবে তুলে ধরার দাবি জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত