অবরুদ্ধ গাজায় অব্যাহত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। এরপর দেশটির একের পর এক বিপাকে পড়ছে। স্থল অভিযান শুরু করে প্রতিনিয়ত সেনা হারাচ্ছে তারা। এবার তাদের সামনে এসেছে আরেক দুঃসংবাদ। ভারি বর্ষণে দেশটির বিভিন্ন শহর তালিয়ে গেছে। গতকাল টাইমস অব ইসরাইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারি বর্ষার কারণে ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে পানি উঠে গেছে। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে। বর্ষার জন্য গোলানি জংশনের কারমেইল, নাজিরেথসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ জায়গায় জায়গায় অচল হয়ে গেছে। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, অতি বর্ষণের কারণে বিভিন্ন সড়কে গাড়ি আটকে গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা ছবিতে দেখা গেছে, বন্যায় বিভিন্ন সড়কে আটকে থাকা গাড়ি অনেকে ঠেলে পার করার চেষ্টা করছেন। এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর।
এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গত শুক্রবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাবটি ১৩-০ ভোটে পাস হয়। নিরাপত্তা পরিষদের মোট ১৫ দেশের মধ্যে ১৩ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। শুরুর দিকে এর খসড়ায় গাজায় অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব রাখা হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার কারণে যুদ্ধবিরতি কথাটি সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে শুধু মানবিক সহায়তার কথা বলা হয়। প্রস্তাবটি এক সপ্তাহ ঝুলে থাকার পর পাস হলেও এতে যুদ্ধ থামানোর কোনো কথা বলা হয়নি। ফলে গাজায় ইসরাইলের হামলা বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর। ভাষণের একপর্যায়ে ইসরাইলি হামলায় নিহত কিশোরী দুনিয়া আবু মোহসেন ও তার পরিবারের কথা সামনে নিয়ে আসেন তিনি। তাদের করুণ পরিণতির কথা বলতে গিয়ে কান্না করে দেন তিনি। রিয়াদ মানসুর বলেন, কিশোরী দুনিয়ার বয়স মাত্র ১৩ বছর। সে ও তার পরিবার নভেম্বরের শেষ দিকে ইসরাইলি বিমান হামলার শিকার হয়। ওই হামলায় তার পরিবারের সব সদস্য নিহত হয়। মারা না গেলেও দুই পা হারায় দুনিয়া। ইসরাইলি হামলা থেকে বেঁচে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলেও ধরে দুনিয়া। এতকিছু হয়ে যাওয়ার পরও বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার কথা জানায় সে। তবে প্রথমবারের হামলা থেকে রক্ষা পেলেও দ্বিতীয় হামলা থেকে রেহাই পায়নি এই কিশোরী। ইসরাইলি বোমার আঘাতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমায় সে।