কুমিল্লার তিতাস উপজেলার দিগন্তজুড়ে সরিষা ফুলের চোখজুড়ানো দৃশ্য। মাঠের পর মাঠ হলুদে একাকার। ভালো ফলনের আভাস দেখে নতুন আশায় বুক বেঁধেছেন উপজেলার সরিষা চাষিরা। তিতাস উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে বিস্তৃত এলাকা। এমন চোখজুড়ানো হলুদের মেলা প্রকৃতিকে সাজিয়েছে অপরূপ সাজে। এক ফুল থেকে আরেক ফুলে গুণ-গুণ করে মধু আহরণে ভিড় করছে মৌমাছি। সেই সঙ্গে কৃষকও এবার ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন। যদি প্রকৃতি বিরূপ আচরণ না করে তাহলে এবার তাদের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস তথ্য মতে, এবার ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে আবাদ হয়েছে ৪৬০ হেক্টর জমিতে; যা গত বছরের তুলনায় আবাদের পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া গত বছর থেকে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনে বেশ গুরুত্ব দেয় সরকার। সেই কারণে এবার সরিষার চাষ বাড়িয়েছেন কৃষকরা। উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের সরিষা চাষি শফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর দুই কানি জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। কানিপ্রতি প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে। মাছিমপুর গ্রামের কৃষক হরমুজ উদ্দিন জানান, গত বছর বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় এবারও সরিষা চাষ করেছি ফলন ভালো ও দাম পেলে আগামী বছর সরিষা চাষে আরো অনেকেই ঝুঁকে পড়বে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন বলেন, কৃষকের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে এবং গত বছর তুলনায় এ বছর বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে, যা হেক্টর প্রতি সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ দশমিক ৩৯ টন। তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমরা সরকারিভাবে উন্নত জাতের সরিষা বীজ ও সার বিনামূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছি। যে কারণে কৃষক আগ্রহ করে সরিষা চাষ করেছেন। আমরা আশাবাদী, আগামীতে সরিষার চাষ আরো সম্প্রসারিত হবে। সেই সঙ্গে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন এবং দেশ একসময় তেল ফসল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হবে।
