ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রামে পেঁয়াজসহ নিত্য পণ্যের দাম ফের ঊর্ধ্বমুখী

প্রশাসনিক অভিযান জোরদার হলে নিয়ন্ত্রণে আসবে দাম
চট্টগ্রামে পেঁয়াজসহ নিত্য পণ্যের দাম ফের ঊর্ধ্বমুখী

চট্টগ্রামে দুই সপ্তাহ না পেরুতেই বাড়ছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। খুচরাপর্যায়ে আবার বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা। কোথাও প্রতি কেজি ১৯০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। নির্বাচনি ঢামাঢোলে প্রশাসনের ব্যস্ততার সুযোগে বাড়তি দাম নেয়া বন্ধ করা যাচ্ছেনা। এতে ক্রেতারা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। পেঁয়াজ ছাড়াও সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম এখন আকাশছোঁয়া। ক্রেতাদের বরাবরের মতো অভিযোগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কারসাজি করে পেঁয়াজসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রশাসন আবার বাজারকেন্দ্রীক অভিযান জোরদার করলে নিয়ন্ত্রণে আসবে দাম। অন্যথায় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের লাগাম টানা কঠিন হবে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের জোগান-সরবরাহ স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও ক্রেতাদের জন্য কোনো সুখবর নেই। সপ্তাহের ব্যবধানে দুয়েকটি পণ্যের দাম সামান্য কমলেও বেশির ভাগ পণ্যের দাম চড়া।

শনিবার ও রোববার নগরীর বহদ্দারহাট ও চকবাজার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন সবজি, আলু, পেঁয়াজ, আদা, চিনি, ব্রয়লার ও মাছের বাজার গত সপ্তাহের মতো রয়েছে বেশ চড়া। বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম যে বেড়েছিল, তার থেকে আর কমেনি। এসব পণ্য চড়া দামে আটকে আছে দীর্ঘদিন ধরে। নিত্যপণ্যের এমন অস্বাভাবিক চড়া দরে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে গিয়ে নানা প্রশ্নের মুখোমখি হতে দেখা যায় খুচরা ব্যবসায়ীদেরও।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, কয়েকটি আইটেমের সবজির দাম কম থাকলেও শীতকালীন প্রায় সব সবজির দাম এখনো ৫০ টাকার উপরে। টমেটো, ফুলকপি, বেগুন ও দেশি আলু (নতুন) ও তিতা করলা বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। পেঁপে, মূলা, বাঁধাকপি, লাউ, পেঁয়াজপাতা, কুমড়া, কাঁচামরিচ ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকায়। সবজি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও সবজির বাজারে বেশ উত্তাপ। গত বছর এদিনে যে আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা ছিল তা বর্তমানে ৫০ টাকার উপরে। আর দেশি নতুন আলু বিক্রি করা হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এতে পাইকাররা দাম না কমালে আমাদের করার কিছু নেই।

অন্যদিকে বাজারে দেশি পেঁয়াজের জোগান ভালো থাকলেও দুই সপ্তাহ ধরে অস্থির হওয়া পেঁয়াজের দামের নিম্নমুখী প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। বাজারে দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা। আর আমদানির পেঁয়াজ বিক্রি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা করে। বিভিন্ন স্থানে ১৯০ টাকা করেও বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো এসপ্তাহেও আদা-রসুনের দাম চড়া। বাজারে আদা বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও রসুন ২১০ টাকা।

এদিকে ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি কেজি বিক্রি ২৯০ থেকে ৩৩০ টাকা। মহিষের মাংসের দাম কমতির দিকে থাকলেও এখনো চড়া গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজারে মহিষের মাংস বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৭০০ টাকা আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকা ও খাসি ১ হাজার ৫০ টাকা। মাছের বাজারে সরবরাহ ভালো। তবে প্রতি কেজি ৩০০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো ধরনের ভালো মাছ।

মাঝারি সাইজের রুপচাঁদা, ইলিশ ও কোরাল বিক্রি হয়েছে ১ হাজার টাকার বেশি দরে। চাষের রুই, কাতলা, ব্রিগেড, কালবাউসের মতো কার্পজাতীয় মাছ বিক্রি সাইজভেদে কেজিপ্রতি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা। পাঙ্গাশ-তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা-গুলশা-ট্যাংরা জাতীয় মাছ কেজি ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে পাইকাররা জানান, আমদানি কম। বাজারে সরবরাহ কম। তাই পাইকারি ও খুচরা দুই পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে কেবল দাম কমতে পারে।

প্রতি কেজি ১২০ টাকায় নেমে আসার পর আবার কেন দাম বাড়ছে- এ প্রশ্নে নগরীর চান্দগাঁও এলাকার খুচরা বিক্রেতা ইদরিস সওদাগর বলেন, আমরা পাইকারদের কাছ থেকে কিনে এনে পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্য বিক্রি করি। পাইকাররা দাম বেশি নিলে খুচরা ব্যবসায়ীদেরও দাম বেশি রাখতে হবে। এছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত