কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ ৪০ স্পটে ‘আয়না’
* এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮১, আহত ১৩৩ * কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রশংসনীয় উদ্যোগ
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার
দুর্ঘটনা এড়াতে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কক্সবাজার অংশের ঝুঁকিপূর্ণ ৪০ স্পটে বসানো হয়েছে ‘আয়না’। সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রশংসনীয় উদ্যোগকে স্বাগতম জানিয়েছে সচেতন মহল। গতকাল কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহে আরেফীন ‘আয়না’ বসানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা বাঁকের কারণে হয়। এ মহাসড়কের কক্সবাজার অংশে ১১৪টি বাঁক রয়েছে। এসব বাঁকে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। তাই আমরাও ওখান থেকে ৪০টি বাঁককে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে ‘আয়না’ বসানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আয়নাগুলো বসানোর কারণে বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহন অপর যানবাহনকে আয়নাতে দেখতে পাবে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে। তিনি আরও বলেন, সড়কে চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে (বাঁক) সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে ‘আয়না’ লাগানো হয়েছে।
প্রকৌশলী মো. শাহে আরেফীন আরো বলেন, অনেক স্থানে বাঁক থাকলেও ৬০-৯০ ডিগ্রি পরিমাণ জায়গা না থাকায় অনেক স্থানে ‘আয়না’ লাগানো সম্ভব হয়নি। পর্যায়ক্রমে আরো কয়েকটি স্পটে আয়না বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কক্সবাজারের চকরিয়ার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাহাত আলম বলেন, চকরিয়া অংশে ঝুঁকিপূর্ণ ১৩ স্পটে ‘আয়না’ বসানো হয়েছে। যার কারণে মহাসড়কে অনেকটা দুর্ঘটনা কমে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার ভোরে চকরিয়ার হারবাং এ দুর্ঘটনাটি বাঁকে হয়নি বলে তিনি জানান। কক্সবাজারের চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোকন কান্তি রুদ্র বলেন, ‘কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অধিকাংশ অংশে প্রশস্ততা কম এবং বাঁকও বেশি। সড়কের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যাও বেশি। মূল সড়ক থেকে ফুটপাত নিচু হওয়ায় গাড়ি খাদে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তা খোকন কান্তি রুদ্র আরও জানান, মহাসড়কের চকরিয়ার ২৯ কিলোমিটার এলাকায় ২৯টি বাঁক রয়েছে। এইসব বাঁক চরমভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কক্সবাজার সার্কেলের (মোটরযান পরিদর্শক) মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ বলেন, দুর্ঘটনা রোধে কক্সবাজার বিআরটিএ কার্যালয় চালকদের সড়ক নিরাপত্তা বিষয় সম্পর্কে সচেতন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সচেতনমূলক সেমিনার করে আসছে নিয়মিত। যার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা কমে এসেছে। তার দেয়া তথ্য মতে, গত এক বছরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক-উপসড়কে ৭৫টি দুর্ঘটনায় ৮১ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৩৩ জন। তিনি আরো বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হয়েছে, বাস গাড়ির অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়িচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে ‘আয়না’ বসানোর কারণে অনেকটা দুর্ঘটনা কমে এসেছে। তিনি সড়ক বিভাগের প্রশংসনীয় উদ্যোগে স্বাগতম জানান।