জাতীয় সংসদ নির্বাচন

শিরীন শারমিন চৌধুরীর প্রতি আস্থা রাখছেন পীরগঞ্জবাসী

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

আসন্ন নির্বাচনে রংপুর-৬ পীরগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মনোনীত নৌকা প্রতীকের ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর প্রতি আস্থা রাখছেন পীরগঞ্জবাসী। তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মোট ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে নৌকা, লাঙ্গল ও স্বতন্ত্র প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখী ভোট লড়াইয়ের সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিগত ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে রংপুর-৬ পীরগঞ্জ আসনে বঙ্গবন্ধুকন্যা পীরগঞ্জের পুত্রবধূ শেখ হাসিনা বিপুল ভোটে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নূর আলমকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে গোপালগঞ্জের আসন রেখে প্রধানমন্ত্রী পীরগঞ্জ আসনটি ছেড়ে দেন। পীরগঞ্জ থেকে নৌকা প্রতীকে শিরীন শারমিন চৌধুরী উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হন। আসন্ন নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মনোনীত নৌকা প্রতীকের ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী নূর আলম মিয়া ও আওয়ামী লীগ মনোনয়নবঞ্চিত জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুল ইসলাম মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় ভোটের সমীকরণ কিছুটা এলোমেলো হয়েছে। এখন পর্যন্ত পোস্টার টানানো, নির্বাচনি সভা, গণসংযোগ ও প্রচার প্রচারণায় অনেক এগিয়ে আছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পীরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত রংপুর-৬ আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ২৯ হাজার ৭৫৪। নারী ভোটার ১ লাখ ৬৫ হাজার পাঁচশত। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার দুইশত ৫৫। হিজরা ৪ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার রয়েছেন ৩৬ হাজার ৭০০ জন। নির্বাচনি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিগত ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মতিউর রহমান চৌধুরীকে ৩২৫ ভোটে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ বিরানব্বই ভোটের মধ্যে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে এরশাদ পায় ৩৫ হাজার ২৬০ ভোট। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রর্তীকের প্রার্থী পেয়েছিল ৩৪ হাজার ৯৩৫ ভোট। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির শাসনামলে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপি, ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল ও অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল শুধু নির্বাচন বর্জন করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, প্রতিরোধও করে। ফলে রংপুর ৬ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় নির্বাচনে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৮৯ ভোটের মধ্যে লাঙ্গল প্রর্তীকের প্রার্থী এরশাদ ৬০ হাজার ৬৬৫ ভোট পেয়ে ২৩ হাজার ৪ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ মনোনীত একই প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পীরগঞ্জ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ানম্যান নির্বাচন না করে মনোনয়ন প্রদান করেন নুর মোহাম্মদ মন্ডলকে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এ আসনে প্রার্থী হয়ে ১২ হাজার ৭৩৯ ভোটে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। জাতীয় পার্টি ভোট পায় ৯০ হাজার ৭৩০। এরপর ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৪২ ভোট পেয়ে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রার্থী নুর মোহাম্মাদ মন্ডলকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো পীরগঞ্জ আসনটি পুনরুদ্ধার করে আওয়ামী লীগের জাতীয় সংসদের সদস্য হন। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ভোট পায় ৩৮ হাজার ৬৭২টি। এ নির্বাচনে নুর মোহাম্মদ মন্ডল জাতীয় পার্টি ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন। পরবর্তীতে উপনির্বাচনে আবুল কালাম নৌকা প্রর্তীকে নির্বাচিত হন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে রংপুর-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে নূর আলম যাদু মিয়া, আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সিরাজুল ইসলাম স্বতন্ত্র ট্রাক প্রর্তীক, কাঁচি প্রর্তীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সম্পূর্ণ নতুন মুখ তাকিয়া জাহান চৌধুরী, বাংলাদেশ কংগ্রেস নামের রাজনৈতিক দল থেকে মাহবুল আলম ডাব প্রর্তীক, জাকারিয়া হোসেন কল্যাণ পার্টির হাতঘড়ি প্রর্তীক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে হুমায়ুন ইজাজ লেভিন (আম) প্রর্তীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।