ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইয়েমেনে হামলা

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যকে সংযমের আহ্বান সৌদি আরবের

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যকে সংযমের আহ্বান সৌদি আরবের

ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্র দেশগুলোকে হামলার ক্ষেত্রে সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রিয়াদ। একই সঙ্গে উত্তেজনা না বাড়ানোর আহ্বানও জানানো হয়েছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে রিয়াদ পুরো পরিস্থিতির ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজে হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়। গতকাল সকালে ইয়েমেনের বেশ কিছু স্থানে হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হুথি কমান্ডারদের পক্ষ থেকে এখনও ওই হামলার বিষয়ে কোনো ধরনের সামরিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, এখনও পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য জোটভুক্ত সদস্যদের লক্ষ্য করে কোনো ধরনের সরাসরি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই আমাদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু এখনও আমরা হুথিদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখিনি। ওই হামলার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, কোরিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। এতে হুথিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় ধরণের ঐক্যমত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে লোহিত সাগরে তাদের হামলা বন্ধ করতে বিদ্রোহীদের প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের আহ্বানের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, বহুপাক্ষিক ওই হামলা ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক আত্মরক্ষার স্বভাবগত অধিকারের আওতায়ই চালানো হয়েছে। এই নির্ভুল হামলাগুলো হুথিদের সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে চালানো হয়েছে যা তারা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথে বৈশ্বিক বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক নাবিকদের জীবনের প্রতি হুমকি হিসেবে ব্যবহার করত। জোটভুক্ত দেশগুলো বলছে, আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে উত্তেজনা কমিয়ে আনা এবং লোহিত সাগরে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।

এদিকে ওই হামলার বিষয়ে হুথি উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যকে এই আগ্রাসনের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জানিয়েছেন, হুথিদের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে সহায়তা করেছে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের যুদ্ধবিমান। ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণই হুথিদের হাতে। গাজায় ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে তারা দৃঢ়ভাবে হামাসকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। মূলত হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার এই যুদ্ধের ঢেউই পৌঁছেছে লোহিত সাগরে। গাজায় বোমা হামলা শুরুর পরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে লোহিত সাগরে। হুথি বিদ্রোহীরা সেখানে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে। এদিকে হুথিদের লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের হামলার ঘটনায় ওই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইয়েমেনের রাজধানী সানা, লোহিত সাগরের হুদাইদাহ বন্দর, ধামার এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাদায় অবস্থিত হুথি বিদ্রোহীদের শক্তিশালী ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত