গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রথমবারের মতো আধুনিক পদ্ধতি সমলয়ের বোরো হাইব্রিড ধান চাষ শুরু করা হয়েছে। কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণের উদ্বোধন করে উপজেলা প্রশাসন। এ সমলয় পদ্ধতিতে চাষে একদিকে খরচ কমবে, অন্যদিকে বাড়বে ধানের উৎপাদন। ফলে এ পদ্ধতিতে বোরো আবাদের কদর বাড়বে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এলাকাবাসী ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় মোট ১০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। এ মৌসুমে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এবারই প্রথম বারের মতো আধুনিক পদ্ধতি সমলয়ের মাধ্যমে এ উপজেলায় হাইব্রিড ইস্পাহানি-৮ জাতের বোরো ধান চাষ শুরু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে বোরো আবাদের জন্য উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়নের হিতলতলী গ্রাম নির্বাচন করে উপজেলা কৃষি অফিস। গত মঙ্গলবার দুপুরে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে সমলয়ের (বোরো হাইব্রিড ধান) চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জায়েদা নাসরিন, উপজেলা পল্লী উন?য়ন কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তানজিলা হাসান, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সাহাজ উদ্দিনসহ উপজেলা প্রশাসনেরকর্মকর্তা-কর্মচারী ও কৃষকরা। এর আগে ওই ইউনিয়নের উত্তর গজারিয়া ব্লকের স্থানীয় ৬০ জন কৃষক সমলয় পদ্ধতিতে আওতাভুক্ত করা হয়েছে। সরকারি কৃষি প্রণোদনা হিসেবে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে চারা রোপণ, ধানের গাছ রোপণ, সারসহ বিভিন? উপকরণ দিচ্ছে কৃষি অফিস। এ হাইব্রিড ইস্পাহানি-৮ ধানের জীবনকাল ১৪৫ দিন। এর মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ দিন বীজতলায়, ধান খেতে বাকি দিনগুলো অতিবাহিত হয়। এ পদ্ধতিতে হাইব্রিড বোরো ধান আবাদে অন্যান্য ধান আবাদের চেয়ে খরচ অনেক কম হবে। প্রতি শতাংশে এ ধান উৎপাদন হবে প্রায় ১ মণ হিসেবে বিঘাতে ৪০ মণ। উৎপাদনের হার অনুপাতে অন্যান্য ধানের তুলনায় সমলয় পদ্ধতিতে প্রায় ৮ থেকে ১০ মণ ধান বেশি হবে। অর্থাৎ এ সমলয় পদ্ধতিতে চাষে একদিকে খরচ কমবে, অপর দিকে বাড়বে ধানের উৎপাদন। ফলে এ পদ্ধতিতে বোরো আবাদের কদর বাড়বে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর সাশ্রয় খরচেও বেশি ধান উৎপাদনের খবরে এ সমলয় পদ্ধতিতে হাইব্রিড ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেক কৃষক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রথম বারের মতো এখানে সমলয়ের বোরো হাইব্রিড ধান চাষ শুরু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে শ্রমিক কম, সময় কম এবং অর্থ খরচও কমবে। এছাড়া অন্যান্য ধানের চেয়ে বিঘাতে ৮-১০ মণ ধান বেশি উৎপাদন হবে। তবে এ পদ্ধতিতে আবাদ আরো বাড়াতে পারলে এখানকার ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অনেক ছাড়িয়ে যাবে।