ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে চিঠি

গোন্তা আলিম মাদ্রাসায় গোপনে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

গোন্তা আলিম মাদ্রাসায় গোপনে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার গোন্তা আলিম মাদ্রাসার সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গোপনে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ করা হয়েছে। এ নিয়োগ পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত ৪ প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এ লিখিত অভিযোগ করেছেন। ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে গত মঙ্গলবার বিকেলে এ অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে প্রকাশ, ওই মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষার ভেন্যু পরিবর্তন করে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান ও অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান বিপুল টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করেন এবং অন্যান্য প্রার্থীদের না জানিয়ে ৪টি পদে ৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ, অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে ৪টি শূন্য পদে ২০২৩ সালের ২৭ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ওই ৪ প্রার্থীসহ ভিন্ন ভিন্ন পদে যথাযথ নিয়মে আবেদন করেন এবং ২১ জুলাই ওই বিজ্ঞপ্তির ৩টি পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র প্রদান করা হয়। পরে একাধিক প্রার্থী টাকা দিয়েও চাকরি পাচ্ছেন না এবং নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিতের জন্য ২০ জুলাই পরীক্ষার আগের দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়। এদের মধ্যে নিরাপত্তাকর্মী পদে জয় ইসলাম ও আয়া পদে ফাতেমা খাতুন স্বাক্ষর করেছিলেন। এরপরেও ২১ জুলাই নির্ধারিত পরীক্ষার তারিখে একাধিক চাকরি প্রত্যাশী প্রার্থী নিয়োগ নেয়ার জন্য টাকা দিয়েও প্রতারণার শিকার হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে একজন কীটনাশক পান ও অপর এক প্রার্থী পরীক্ষা কক্ষেই রশি দিয়ে গলায় ফাঁস নেয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় নিয়োগের ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মাদ আবু নঈম নিয়োগ স্থগিত করেন। পরে পরীক্ষার ভেন্যু পরিবর্তনের জন্য ৩ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মাধ্যম করে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক লিখিত আবেদন করেন ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৪ ডিসেম্বর ওই লিখিতপত্রে সুপারিশ করেন। অন্য কোনো প্রার্থীদের প্রবেশপত্র না দিয়েই গোপনে ওই ৪ পদে ৪ জনকে নিয়োগ সম্পন্ন করে বিল প্রদানের জন্য মাদ্রাসা অধিপ্তরে প্রেরণ করেন সভাপতি ও অধ্যক্ষ। এদিকে আয়া পদপ্রার্থী ফাতেমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার আগেই ২০২০ সালে অধ্যক্ষ ৬ লাখ টাকা নিয়েছে। নিয়োগের জন্য টাকা দেয়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছি। নিরাপত্তাকর্মী পদে আবেদন কারী জয় ইসলাম বলেন, ২১ জুলাই পরীক্ষার প্রবেশ পত্র পাই। কিন্তু পরীক্ষা দিতে এসে জানতে পারি আগেই আমার পদের প্রার্থীর কাছে থেকে মোটা অংকের ঘুষ নেয়া হয়েছে। যা নিয়ে মাদ্রাসা চত্বরে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন। এরপর আমাকে আর প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি। অথচ গোপনে সুপার ও সভাপতির পছন্দের ৪ প্রার্থীকে ভূতুরে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার পদে আবেদনকারী হাদিউল ইসলাম ও আরমান সরকার জানান, আমাদের কোনো প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি। এ ধরনের জালিয়াতি নিয়োগ বাতিলসহ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ দানের জন্য দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বলেন, নিয়োগ বোর্ড ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির নির্দেশে ওই ৪ পদের নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এ নিয়োগে কোনো অনিয়ম দুর্নীতি হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত