ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মেয়র ব্যারিস্টার তাপস

ঢাকাকে পূর্ণ বৈশিষ্ট্যে ফিরিয়ে আনতে হলে ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হবে

ঢাকাকে পূর্ণ বৈশিষ্ট্যে ফিরিয়ে আনতে হলে ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হবে

ঢাকাকে তার পূর্ণ বৈশিষ্ট্যে, পূর্ণ চরিত্রে ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস নূর তাপস। গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নেতার মাজার সংলগ্ন এলাকায় সংস্কার-পরবর্তী ঐতিহাসিক ‘ঢাকা ফটক (গেট)’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন। মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমরা সারা বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশ ঘুরি। অনেক কিছুই আমরা দেখি। আমরা যদি দুবাই, সিঙ্গাপুরের কথা বলি, তাহলে আপনারা দেখবেন অনেক বড় বড় অট্টালিকা, বড় বড় সড়ক, বড় বড় স্থাপনা। কিন্তু তার সবই নতুন। তারা হয়তো সাগরকে ভরাট করে নির্মাণ করছে। এরকম তারা অনেক কিছুই করতে পারবে। কিন্তু ৪০০ বছরের পুরোনো ঢাকা ফটক সেসব এলাকায় পাওয়া যাবে না। এটাই হলো আমাদের ঐতিহ্যের জায়গা, আমাদের গর্বের জায়গা। সুতরাং ঢাকাকে যদি তার পূর্ণ বৈশিষ্ট্যে, পূর্ণ চরিত্রে ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে আমাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হবে।’ এই সংস্কার কাজের মাধ্যমে দুটো বিষয়কে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমার প্রথম সন্তান যেদিন হয়েছিল, সেদিন যে রকম আনন্দিত হয়েছিলাম আমি আজকে সে রকম আনন্দ বোধ করছি। আজকে আমরা একটি ইতিহাসকে পুনরুজ্জীবিত করেছি, সে রকম একটি আবেগ-উপলব্দি আমার মধ্যে কাজ করছে। ছোটবেলায় যখন আমরা গুলিস্তান দিয়ে যেতাম তখন এই কামানের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। অনেকে দেখতাম সেই কামানের উপর খেলাধুলা করছে। এটা হারিয়ে গিয়েছিল। এই কামান দিয়ে মীর জুমলা আসাম আক্রমণ করেছিলেন এবং আসাম বিজয় করেছিলেন। সেই কামানটি এখন ঢাকা ফটক প্রাঙ্গণে আমরা নিয়ে এসেছি। সুতরাং আমরা দুটি বিষয়কে পুনরুজ্জীবিত করেছি। একটি হলো ঢাকা ফটক, আরেকটি হলো আসাম অভিযানের শেষ নিদর্শন এই কামান।’ ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় লালকুঠি সংস্কার করা হচ্ছে এবং এ বছরের মধ্যে তা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানান। এছাড়াও তিনি রুপলাল হাউজ, বড় কাটরা ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো সংস্কার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তরের জন্য এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও ঢাকা জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান এবং সেগুলো হস্তান্তরে সবার ভূমিকা কামনা করেন। এ সময় তিনি ঢাকা ফটকসহ এসব ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতে কোনো ধরনের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন না লাগানোর জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন এবং লাগানো হলে জরিমানা করা হবে বলেও জানান। ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আজকের এই উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকার ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে রক্ষা করার একটি মহতী উদ্যোগ নিয়েছেন। সেজন্য তাকে অভিবাদন জানাই। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এমনই উদ্যোগ নেবেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। মুনতাসীর মামুন স্যার বলেছেন, সেই স্বাভাবিক উদ্যোগ অনেক প্রচেষ্টা করেও তিনি কাউকে দিয়ে করাতে পারেন নাই। কিন্তু আমাদের বর্তমান মেয়র সেই স্বাভাবিক কাজটি দ্রুতগতিতে উদ্যোগ নিয়ে করেছেন। এটাই হলো স্বাভাবিকের ভেতরে অস্বাভাবিক কাজ। সুতরাং এই অস্বাভাবিক কাজটি আমাদের আগামী দিনের জন্য আরো করে যেতে হবে। ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে আমাদের অনেক স্থাপনা এবং প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয় জড়িত আছে। যেগুলো নিয়ে অনেক গবেষক, ইতিহাসবিদ কাজ করে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত