শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৈধুরী বলেছেন, নতুন পাঠ্যপুস্তকে বিভ্রান্তিকর কিছু থাকলে তা সংশোধন করা হবে। তিনি শিক্ষাক্রমের বিরোধিতার নামে অপরাজনীতি না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) মাদ্রাসা শিক্ষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। এর ফলে তারা মাদ্রাসার জন্য প্রণীত পাঠ্য বইয়ে তাদের মতামত প্রদান ও অবদান রাখতে পারবেন।
শিক্ষামন্ত্রী গতকাল রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এ উপমহাদেশে হাজার বছর ধরে বহমান ইসলামি ভাবধারা দেশের আলিয়া মাদ্রাসায় চর্চা করা হয়। ইসলাম শিক্ষার বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রেখে মাদ্রাসায় নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ সাদরে গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন নতুন শিক্ষাক্রম দক্ষতামূলক, যা মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। এর সঙ্গে ধর্মের কোনো বিরোধ নেই।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বীনি শিক্ষার উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন। সরকার ১৮০০ মাদ্রাসা ভবন নির্মাণ ছাড়াও প্রচুর সংখ্যক মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। মন্ত্রী এ সময় মাদ্রাসা শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনা করা হবে বলে জানান।
আলোচনাকালে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জাতীয় পাঠ্যক্রমের বিষয় ছাড়াও ধর্মীয় বিষয় অধ্যয়ন করে।
তাই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা মূলধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে। মতবিনিময় সভায় শিক্ষক নেতা শাহজাহান আলম সাজু বলেন, অতীতে মাদ্রাসা শিক্ষকদের সংগঠনের নামে কিছু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করেছেন। তারা ইসলামের চর্চার চেয়ে স্বাধীনতাবিরোধী জামাতে ইসলামীর মতাদর্শ প্রচারে অধিক ব্যস্ত ছিলেন। তবে বর্তমান সরকার মাদ্রাসায় প্রকৃত ইসলামের চর্চার পরিবেশ বজার রাখতে কাজ করে যাচ্ছে।
সভায় সারাদেশ থেকে আগত শিক্ষকগণ জানান, নতুন শিক্ষাক্রম মাদ্রাসার সাঙ্গে জড়িত সকলেই ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাভীতি কমেছে যা ঝরে পড়া রোধে সহয়তা করবে। উপস্থিত সকলেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আব্দুর রশিদ।