ঘরে ঘরে জামাইসহ স্বজনরা

সিরাজগঞ্জে আনন্দঘন পরিবেশে ঐহিত্যবাহী বাহারি দই মেলা

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ

শস্যভাণ্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের চলনবিল এলাকার তাড়াশ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দই মেলা আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মেলায় বিভিন্ন নামে বাহারি দই বিক্রি জমে উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩০০ বছরের এ দই মেলায় দই, চিড়া মুড়ি মুড়কি ও বিভিন্ন রকমের হরেক রকমের খাবার ও পণ্য সামগ্রীও উঠেছে। দই বিক্রিতারা জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো মেলায় হাজার হাজর মণ বাহারি রকমের দই উঠেছে। তবে দ্রব্যমূল্য বেশি থাকায় এ দই বিক্রি কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। কারণ সম্পর্কে তারা আরো বলেন, দুধের দাম ও বিভিন্ন খরচ বৃদ্ধির কারণে দইয়ের দামও বেড়েছে। দিনব্যাপী মেলা হলেও চাহিদা থাকার কারণে দই অবিক্রিত থাকার কথা নয়। কারণ এ অঞ্চলের মানুষ দই প্রিয়। আর ক্রেতারা বলছেন, আগে দইয়ের পাত্র আকার ছিল বড় এখন ছোট আকারের এবং প্রতি কেজি দই বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। এসব দই গত বছর বিক্রি হতো ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়। এ মেলায় বগুড়ার শেরপুর, নাটোর, টাঙ্গাইল, পাবনা ও সিরাজগঞ্জের, চান্দাইকোনা, তাড়াশের ঘোসেরা মেলায় হাজার হাজার মণ দইয়ের পসরা বসিয়ে বেচাকেনা করেন। এসব দইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্ষীরসা দই, শাহী দই, শেরপুরের দই, বগুড়ার দই, টক দই, শ্রীপুরী দই। এ মেলা উপলক্ষ্যে এলাকায় বাড়ি বাড়ি জামাইসহ আত্মীয়-স্বজনরা আসেন এবং মেলায় তারা দইসহ বাহারি রকমের বিভিন্ন খাবার ও পণ্যসামগ্রী কেনাকাটা করেন।

উল্লেখ্য, প্রায় ৩০০ বছর আগে তাড়াশের তৎকালীন জমিদার পরম বৈঞ্চব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম এ দই মেলার প্রচলন করেছিলেন। জনশ্রুতি আছে তৎকালীন পরম বৈঞ্চব জমিদার রাজা রায় বাহাদুর দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। এ থেকেই জমিদার বাড়ির সম্মুখে রশিক রায় মন্দিরের মাঠে সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে ৩ দিনব্যাপী দই মেলা বসত। এ দই মেলা এখনো মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে উৎসব আমেজে বসার বার্ষিক রেওয়াজ এখনো রয়েছে। দইয়ের মেলায় আসা এ অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারণে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে। এ মেলা জেলার আদি ঐতিহ্যের অংশ এবং সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন করেন। তবে এখানে হিন্দু-মুসলিম সব শ্রেণির মানুষই এ মেলায় অংশগ্রহণে কেনাকাটা করেন। এছাড়া জেলা-উপজেলা শহরগুলোতেও এ দই মেলা জমে উঠেছে।