জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনায় চলমান আন্দোলনের পাঁচ দফা দাবি আদায় না হলে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে বাধা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন তারা। তাদের দাবিগুলো হলো- ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ‘নিপীড়ক শিক্ষক’ মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তি করাসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা; ‘নিপীড়কদের সহায়তাকারী’ প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করা এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িত ব্যক্তিদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, ‘আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা ডেকে সেখানে আমাদের পাঁচ দফা দাবি উত্থাপনের জন্য আহ্বান জানিয়েছি। তারপরও প্রশাসন যদি দাবিগুলো বাস্তবায়নে গড়িমসি করে, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। তার পরিপ্রেক্ষিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন বাধাগ্রস্ত হলে, সেটার সম্পূর্ণ দায় একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে।’ পরে তিনি নিপীড়ক শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা দাহ করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফর্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহি সাত্তার বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন হবে নাকি হবে না- তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। একজন নিপীড়ক শিক্ষকের সঙ্গে আমরা ভর্তি পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করতে চাই না। যদি চলমান আন্দোলনের দাবিগুলো বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যর্থ হয়, তাহলে ভর্তি পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হবে। এছাড়া তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন প্রমুখ।