চকরিয়ায় তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন
বাদ পড়েনি মাতামুহুরী নদীর জেগে ওঠা চরও
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
একেএম ইকবাল ফারুক, চকরিয়া (কক্সবাজার)
কক্সবাজারের চকরিয়ায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু হয়েছে। এ বছর চকরিয়া উপজেলায় অন্তত দুই হাজার হেক্টর জমিতে তামাক আবাদ করেছেন চাষিরা। তামাকের এ ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে বাদ পড়েননি তিন ফসলি জমি, মাতামুহুরী নদীতে জেগে ওঠা চর, নদীতীরের খাস জমি, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সমতল ভূমিও। এছাড়াও রয়েছে ব্যক্তিমালিকানাধীন ফসলি জমিও। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে অন্তত ৮টি ইউনিয়নে তামাক আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি তামাক চাষ হয়েছে উপজেলার বমু বিলছড়ি, সুরাজপুর-মানিকপুর ও কাকারা, ইউনিয়নের দুই তৃতীয়াংশ জমিতে তামাকের আবাদ হয়েছে। এছাড়া লক্ষ্যারচর, বরইতলী, খুটাখালী, চিরিংগা ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নেও ব্যাপক ফসলি জমিতে তামাকের আবাদ হয়েছে। এতে করে শস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত চকরিয়ায় ব্যাপক খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা করছেন সমাজ সচেতন ব্যক্তিরা। বিশেষ করে বমু বিলছড়ি, সুরাজপুর-মানিকপুর ও কাকারা, ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মাতামুহুরী নদীতে জেগে ওঠা চর, নদী তীরবর্তী খাস জমি, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সমতল ভূমি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ফসলি জমি যে দিকেই তাকাই চোখে পড়ে শুধু তামাক চাষ আর তামাক চাষ। আর এ তামাক পাতা শোধনের জন্য বসতবাড়ির আঙিনা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পার্শ্ববর্তী জায়গা ও বিভিন্ন লোকালয়ে বসানো হচ্ছে তামাক চুল্লি। এছাড়া আগে থেকে যেসব জায়গায় তামাক চুল্লি তৈরি করা ছিল তামাক পাতা শোধনের জন্য সেসব চুল্লিও মেরামত করছেন চাষিরা। এসব তামাক চুল্লির পাশে আগে থেকে মজুদ করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সামাজিক বনায়ন ও সংরক্ষিত বন উজাড় করে আনা কাঠের স্তূপ। এসব তামাক চুল্লির জ্বালানি সংগ্রহ করতে গিয়ে উজাড় করা হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, কাটা পড়ছে ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের লাখ লাখ চারা গাছও। অপরদিকে তামাক পাতা শোধনের জন্য বাড়ির উঠান, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে নির্মিত চুল্লিগুলোও সংস্কারের কাজ চলমান থাকায় তামাক পোড়ার নিকোটিনের উৎকট গন্ধে ঘুম হারাম হওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। তামাকপ্রবণ ইউনিয়নগুলোর সচেতন বাসিন্দা বলেন, যখন তামাক পাতা শোধনের কাজ শুরু হবে তখন নিকোটিনের গন্ধে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে। এ সময় স্বাভাবিকভাবে শ্বাস প্রশ্বাসও নিতে পারবে না এখানকার সাধারণ মানুষ। ফলে নানা ধরনের রোগ বালাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে।