ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

এখনো বহাল তবিয়তে সেই টিআই নির্মল

ব্যবসায়ীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল
এখনো বহাল তবিয়তে সেই টিআই নির্মল

কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন মোড় এলাকায় একজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীকে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) নির্মল দেবনাথ কর্তৃক প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরীর নজরে আসার পর গতকাল শুক্রবার সকালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মারধরের শিকার ওই ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীর খোঁজখবর নেন বলে জানা গেছে। তবে এখনো বহালতবিয়তে রয়েছে সেই টিআই নির্মল দেবনাথ। গতকাল বিকালেও তাকে কলাতলীতে সাদা পোশাকে ঘুরতে দেখা গেছে। তবে অন্যদিনের মতো বেপরোয়া আচরণ ছিল না তার।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭. ৫১ মিনিটে সংঘঠিত ঘটনার এক মিনিট ২৭ সেকেন্ড ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) নির্মল দেবনাথ ওই ব্যবসায়ীকে লাথি-থাপ্পড় ঘাড়ে আঘাত ও ধাক্কিয়ে পুলিশ বক্সে নিয়ে যান। সেখানেও তাকে মারধর করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। পরে অন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এই মারধরের ঘটনার ভিডিও গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রায় সময় ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) নির্মল দেবনাথ তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকেন। এমনকি ওই সব ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এইরকম আচরণে ক্ষুব্ধ খোদ ট্রাফিক বিভাগের একাধিক লোকজন।

এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) নির্মল দেবনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই ব্যবসায়ীকে ফুটপাত থেকে একাধিকবার সরে যেতে বলার পরও সরে না যাওয়ায় ‘রাগের মাথায়’ মারধর করা হয়েছে। ভাই বিষয়টি ছোট চোখে দেখলে তো হয়। ভাই ডলফিন মোড়ে আসিয়েন চা খেয়ে যান।

বিষয়টি নিয়ে গতকাল দুপুরে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতেই ভিডিওটি নজরে আস। গতকাল সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। অভিযুক্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই)র বিরুদ্ধে প্রকৃত ঘটনাটি লিখিত আকারে পুলিশ সুপার বরাবর জানানো হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মারধরের শিকার ব্যবসায়ী পারভেজ কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, অহেতুক নির্মল স্যার আমাকে মেরেছে। সকালে ট্রাফিকের জসীম স্যার এসেছিলেন। আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, খোঁজখবর নিয়েছেন। স্যার আমাকে মাথায় হাত বুলিয়ে (সান্ত¡না) দিয়েছেন। স্যারের ভালোবাসা দেখে মারধরের কষ্ট ভুলে গেছি।

প্রসঙ্গত: গত ৩১ জানুয়ারি একই স্থানে পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে ছবি তুলতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মাজহারুলের হাতে লাঞ্ছিত হন দৈনিক সকালের কক্সবাজারের বার্তা সম্পাদক রাশেদুল মজিদ। এসময় সার্জেন্ট মাজহারুল সাংবাদিক রাশেদুল মজিদের মোবাইল ফোন ও পত্রিকার পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। ওই সার্জেন্টের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবুও সেই সাজেন্ট মাজাহারুল এখনো কক্সবাজারের টেকনাফে কর্মরত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত