আত্রাই নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে শুধুই বালু আর বালু। এর মাঝে এ পলির আশাতীত পলি স্তরের কারণে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় স্বপ্ন বুনছেন কৃষক-কৃষানিরা। এসব চরে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করছেন তারা। চরের এই চাষাবাদ শস্য প্রধান এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ্য করেছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার গোবিন্দপুর, বেলপুকুর ও কায়েমপুর এলাকার চর ঘুরে দেখা যায়, নদীর বুকে জেগে ওঠা চর পলিমাটি মিশ্রিত উর্বর আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। সেখানে চাষাবাদে কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এসব চরে চাষ হচ্ছে ধান, পেঁয়াজ, গম, ভুট্টা, সরিষা, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা ধরনের শাকসবজি। জানা যায়, নদীতে চর জেগে ওঠার পর ওই এলাকার কৃষকদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে চরে চাষাবাদ করে। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী বীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে সীমনা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে পরে সেটি সমাধান করেন খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজ উদ্দিন ও ওসি মোজাহারুল ইসলাম। খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে আত্রাই নদীর চরে আলোকঝাড়ী, বাসুলী, গোবিন্দপুর, বেলপুকুর, কায়েমপুর, জোয়ার, শুড়িগাও, আগ্রা ও চাকিনিয়া এলাকায় মোট ৫৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এরমধ্যে বোরো ধান ৪৫ হেক্টর, পেঁয়াজ ৩ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১ হেক্টর ভুট্টা ৪ হেক্টর ও সরিষা ২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের উৎসাহে গত মৌসুমের চেয়ে চাষাবাদ বৃদ্ধি হয়েছে। উপজেলার গোবিন্দপুর চরের চাষি ভ্যানচালক ছমির উদ্দিন বলেন, নিজের কোনো আবাদি জমি নেই। নদীতে চর পড়ায় ফসলের আবাদ শুরু করেছি। ধানের পাশাপাশি পেঁয়াজ ও বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি চাষ করেছেন। এসব চাষ করে বাড়তি আয় হবে, যেটি সংসারে কাজে লাগবে বলে তিনি জানান, চরের আশপাশের সব কৃষক এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এনামুল ইসলাম নামে আরেক চাষি বলেন, চরে প্রায় বিঘা খানেক জমিতে ধান চাষ করেছি। অন্য আবাদি জমির চেয়ে চরের ধান চাষে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। সেই সঙ্গে ভালো ফলনও পাওয়া যায়। খামারপাড়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ.ম. জাহেদুল ইসলাম বলেন, চরে ধান ও পেঁয়াজ আবাদ অনেক ভালো হয়। সেই সঙ্গে চরে চাষাবাদ উপযোগী ফসলের ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানে আমরা কাজ করছি। ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, অন্য আবাদি জমির সঙ্গে চরে চাষাবাদে যেমন কৃষকরা লাভবান হচ্ছে, তেমন খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।