দুই বছর আগে নিখোঁজ যুবকের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নাটোর প্রতিনিধি

নিখোঁজের দুই বছর পর মাটিতে পুতে রাখা মাফিজুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম। এর আগে গত রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গুরুদাসপুরে চাঁচকৈড় পুরানপাড়া এলাকার বালিকা দাখিল মাদরাসার টয়লেটের ভেতরে মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আসামিরা হলেন- সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার কাচারীপাড়া এলাকার মো. ওজারত আলীর ছেলে মোঃ আল হাবিব সরকার, গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় তালুকদারপাড়ার আহম্মদ খলিফা ছেলে মো: আবু তাহের খলিফা, একই উপজেলার খামারনাছকৈড় এলাকার মো: আব্দুস সামাদের ছেলে মো: আশরাফুল ইসলাম এবং সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার কাচারীপাড়া এলাকার হাবিব সরকারের স্ত্রী মোছাঃ তানজিলা খাতুন। পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, নিহত মাফিজুল ইসলাম ও আসামি তানজিলা খাতুন একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে শ্রমিকের কাজ করত। একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামি আল হাবিব সরকার ও স্ত্রী তানজিলা খাতুনের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ সৃষ্টি হয়। ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল মাফিজুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে আর বাড়ি ফিরে না আসায় তাকে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে সন্ধান না পেয়ে গুরুদাসপুর থানায় তার পরিবার একটি জিডি করে। পুলিশ সুপার জানান, পারিবারিক বিরোধের কারণে স্ত্রী তানজিলা খাতুনের একটি মামলায় আসামি আল হাবিব সরকার নাটোর জেল হাজতে যেতে হয়। জেলহাজতে আটক থাকাকালীন মো: জাকির মুন্সির সঙ্গে পরিচয় এবং বন্ধুত্ব হয়। তাদের মধ্যে নিয়মিত কথাবার্তা চলত। কথাবার্তার একপর্যায়ে মো: জাকির মুন্সির কাছে আসামি মো: আল হাবিব সরকার বলে মাফিজুল ইসলামকে জীবনের মতো শেষ করে দেবার হুমকি দেন এবং খুন করার পরিকল্পনা করেন তিনি। পরবর্তীতে ১৭ এপ্রিল রাতে তানজিলা খাতুন পরকীয়া প্রেমিক মাফিজুলকে চাঁচকৈড় পুড়ানপাড়ায় তার বাবার বাড়িতে আসতে বলেন। এক পর্যায়ে আসামি তানজিলা, তার স্বামী আল হাবিব, বাবা তাহের খলিফা এবং প্রেমিক আশরাফুলের সহযোগিতায় মাফিজুলকে শ্বাসরোধ এবং বুকের ওপর শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন এবং রাতেই বাড়ির পাশের চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদরাসার নির্মাণাধীন টয়লেটের মেঝের বালু খুঁড়ে সেখানে মরদেহ পুঁতে রাখা হয়। পুলিশ সুপার আরো জানান, এ ঘটনাটি জানাজানি হলে শুক্রবার থানায় একটি হত্যা মামলা করে নিহতের পরিবার। মামলার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। গত শুক্রবার রাত থেকেই চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদরাসায় পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। পরে রোববার সকাল থেকে ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তার ও সাক্ষীসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক লোকজনের উপস্থিতিতে মাদ্রাসার টয়লেটের ভেতরে মাটির নিচ থেকে মাফিজুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।