ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সূর্যমুখী চাষে সফল উপকূলের হাজারও কৃষক

সূর্যমুখী চাষে সফল উপকূলের হাজারও কৃষক

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চল কলাপাড়া উপজেলার মাঠে প্রান্তরে এ যেন হলুদের সমারোহ। মাঠের পর মাঠ, বিলের পর বিল, যেদিকে তাকাই সেদিকে শুধু হলুদ গালিচার মতো সূর্যমুখী খেত। কম খরচে অধিক ফলন ও লাভবান হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছে এ উপজেলার কৃষকরা। ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধিতে বিকল্প পদ্ধতি ও অধিক লাভের আশায় দিন দিন এটি চাষ বাড়ছে বলে মনে করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সূর্যমুখী খেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে উপকূলের হাজারও কৃষক। ভালো ফলন ঘরে তোলার আশায় পরিচর্যার কোনো কমতি নেই তাদের মধ্যে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর মোট ১৯৫০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইসান-৩৩, বারি সূর্যমুখী-১ ও বারি সূর্যমুখী-২ জাতের ফুলের চাষ বেশি করেছে কৃষকরা। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ১২০০ হেক্টর জমিতে এ ফুলের চাষ বেশি হয়েছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় কমবেশি এ সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস নিশ্চিত করেছে।

কৃষকরা জানান, তাদের প্রতি বিঘা জমিতে ১৩ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন ভালো হবে। এতে তারা সুর্যমূখীর বিচি প্রতি মণ ৩৫০০ টাকার ওপরে বিক্রি করতে পারবেন। তবে স্থানীয়ভাবে এ বীজ থেকে তৈল উৎপাদনের সুযোগ থাকলে আরো লাভবান হওয়া যেত বলে একাধিক সূর্যমুখী চাষিরা জানান। লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়া পাড়া গ্রামের কৃষক সোহরাফ জানান, বর্তমানে তার খেতের ফলন খুব ভালো হয়েছে। শুরুতে ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলেও কৃষি অফিসের পরামর্শে তা ঠিক হয়ে গেছে। এ বছর তিনি ১০ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। ফসল উঠলে পাঁচ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। কুয়াকাটা পৌরসভার তুলাতলী এলাকার কৃষক জয়নাল আকন বলেন, আমি এক একর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। অন্য বছরের চেয়ে এ বছর আমাদের সূর্যমুখী ফলন খুবই ভালো। সঠিকভাবে সার ওষুধ ও কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে ভালো ফলনের আশা করছি আমরা। তবে বৃষ্টি হলে আরো ভালো ফলন হতো। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, সূর্যমুখী ফুলের তেল স্বাস্থ্যসম্মত ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। এ তেলের ব্যবহার বাড়ানো গেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকটাই কমবে। কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, কৃষকদের আমরা বিনামূল্যে বীজ, সার ও প্রয়োজনীয় কীটনাশক দিয়ে সহযোগিতা করেছি। কৃষকরা সূর্যমুখী চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছে। গত বছর ৭২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হলেও এ বছর তা অনেক বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, এ বছর উপজেলায় মোট ১৯৫০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত