ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতীয় সংলাপে ড. আইনুন নিশাত

মানুষ ভালো নেই, দুর্যোগ বাড়বে প্রস্তুতিও বাড়াতে হবে

মানুষ ভালো নেই, দুর্যোগ বাড়বে প্রস্তুতিও বাড়াতে হবে

পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেছেন, প্রকৃতি বদলাচ্ছে। আমাদের অবশ্যই প্রকৃতিকে বুঝতে হবে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল সমুদ্রগর্ভে বিলীন হবে আর লবণাক্ততা বেড়ে ঢুকে যাবে আরো ভেতরে। মানুষ ভালো নেই, দুর্যোগ বাড়বে, প্রস্তুতি বাড়াতে হবে। কম্যুউনিটির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ছাড়া উপায় নেই।

গতকাল পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’র (ধরা) আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘উপকূলের জীবন-জীবিকা : সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ষড়ঋতুর দেশে আজ চার ঋতুতে পরিণত হয়েছে। আষাঢ়েও এখন আর বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায় না। রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংয়ের বিকল্প নেই। মানুষকে সচেতন হতে হবে। কম্যুউনিটি বেজড অ্যাডাপটেশন নিয়ে কাজ করতে হবে, বাড়াতে হবে কম্যুউনিটির অংশগ্রহণ।

এ সময় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নদীর দখল করে প্রস্তুত করা স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। নদী দখল করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা যাবে না। নদী বাঁচাতে হবে। পরিবেশ বাঁচাতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ধরা’র সহ-আহ্বায়ক শরমীন মুরশিদ বলেন, নদী হলো পাবলিক প্রাপার্টি। এই নদীতে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে কার সিদ্ধান্ত? নদীতে বর্জ্য ফেলা আইন করে বন্ধ করতে হবে। উপকূল রক্ষায় গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। উপকূলের কম্যুউনিটির মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের বেসরকারি উপদেষ্টা এমএস সিদ্দিকী বলেন, মানুষই যদি না থাকে তাহলে উন্নয়ন দিয়ে কী করব। মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বাঁচাতে হবে নদী ও পরিবেশকে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকাতে সবাই একত্রে কাজ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আর্চবিশপ বিজয় নিসফরাস ডি’ক্রুজ বলেন, উপকূলের মানুষের কান্না আমরা শুনতে পাই। তাদের কান্না যেন আমাদের হৃদয়েও বাজে। সৃষ্টিকর্তার এই পৃথিবীর সব মানুষ ভাই ভাই। সংঘাতে না জড়িয়ে নিজেদের রক্ষা করতে আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

জাতীয় সংলাপে উপকূলীয় অঞ্চল থেকে আসা জলবায়ুর অভিঘাতে ভুক্তভোগীরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অনাবৃষ্টি, বর্জ্য থেকে পানিদূষণও ইলিশের অভয়াশ্রমের প্রবেশপথে নানান প্রকল্পে ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভরা মৌসুমে ইলিশের দেখা না মেলার মূল কারণ। পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্রে দীর্ঘ ডুবোচর, রাবনাবাদ, আগুনমুখা, আন্ধারমানিক এলাকায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হওয়ায় ইলিশের আনাগোনা কমে গেছে। কক্সবাজার সংলগ্ন মাতারবাড়ী অঞ্চলে উপকূলীয় মৎস্য সম্পদ ও মৎসজীবীদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে।

সংলাপে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী এবং সরকারি সংস্থা ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভের গবেষণা এবং কর্মসূচি বাস্তবায়ন ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল ফারুক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত