ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

২২ দিন পর ফিরেছে ছোয়াদ চক্রের প্রধানসহ গ্রেপ্তার ১৭

অপহরণ বাস্তবায়নকারী নারী ছোয়াদের বাড়ির গৃহকর্মী
২২ দিন পর ফিরেছে ছোয়াদ চক্রের প্রধানসহ গ্রেপ্তার ১৭

এই যে পুরোটাই একটি গল্প বা চলচ্চিত্রের কাহিনী। অপহরণ আর মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা নিয়েই প্রবাসীর বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন এক সময়ের পুরোনো রোহিঙ্গা উম্মে সালমা। আর সেই সূত্র ধরেই ৯ মার্চ কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে অপহরণ করা হয়েছিল ৬ বছরের শিশু মাদ্রাসাছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে। আর ২২ দিনের মাথায় গত শনিবার (৩০ মার্চ) কুমিল্লার লালমাই এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে শিশুটিকে। গতকাল শিশুটি অবশেষে ফিরেছে তার মায়ের কাছে। আর একই ঘটনায় গত ২২ দিনে দফায় দফায় গ্রেপ্তার ১৭ জনের কাছে মিলেছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। আর সেই তথ্য শুনে মনে হবে এটি একটি চলচ্চিত্রের কাহিনী। গতকাল দুপুরে টেকনাফ থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অপহরণের বিস্তারিত বর্ণনা দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মোহাম্মদ রাসেল ও টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি। অপহৃত শিশু ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর ছেলে। সে পূর্ব পানখালী এলাকার আবু হুরাইরা (রা.) মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র। সংবাদ সম্মেলনে শিশুর মা নুরজাহান বেগমও উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় কয়েক দফায় গ্রেপ্তার ১৭ জন হলেন, টেকনাফের মোচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নাগু ডাকাতের ছেলে আনোয়ার সাদেক, তার পিতা মৃত আবদুর শুক্কুরের ছেলে নাগু ডাকাত, মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী লায়লা বেগম, মোহাম্মদ খানের স্ত্রী উম্মে সালমা, নাগু ডাকাতের ভাই মোহাম্মদ হাশেম, সৈয়দুল হকের স্ত্রী খাতিজাতুল খোবরা, নাগু ডাকাতের স্ত্রী আয়েশা বেগম, সাদেকের স্ত্রী হোসনে আরা, নাগু ডাকাতের অপর ছেলে রনি, কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিরপাড়ায় বসবাসকারি পুরোনো রোহিঙ্গা জাফর আলমের ছেলে নাসির আলম, মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের মাইস্যাঘোনা এলাকার মনছুর আলমের ছেলে সালামত উল্লাহ প্রকাশ সোনাইয়া, একই ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার মৃত কালামিয়ার ছেলে জহির আহমেদ, শামসুল আলমের ছেলে হাসমুল করিম তোহা, সামিরাঘোনা এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ, তার বাবা মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে ফরিদুল আলম খান, সালামত উল্লাহর ছেলে মো. আমির হোসেন, শামসুল আলমের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম তোহা। এরা সবাই পরস্পর আত্মীয় এবং রোহিঙ্গা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মোহাম্মদ রাসেল জানান, আনোয়ার সাদেকই মূলত এই অপহরণ চক্রের প্রধান হিসেবে কাজ করে আসছে। পরিবারের সদস্য, আত্মীয়দের নিয়ে গঠিত অপহরণ চক্রের প্রদান সাদেকের পরিকল্পনায় উম্মে সালমা টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নিয়েছিল। যেখানে কিছু দিন কাজ করার পর ছেলে ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহর সাথে পরিচয় এবং সখ্যতা তৈরি করে। এর কিছু দিন পর উম্মে সালমা চলে গিয়ে অপহরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৯ মার্চ অপহরণ করা হয় শিশু ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গত ৯ মার্চ দুপুরে ক্লাস শেষে মাদ্রাসা থেকে ফেরার পথে ছোয়াদকে দুর্ঘটনায় মায়ের মাথা ফেটে গেছে এবং হাসপাতালে মাকে দেখতে যাওয়ার কথা বলে ছোয়াদকে অটোরিকশায় তুলে অপহরণ করেন উম্মে সালমা। ওইদিন সন্ধ্যায় ভূক্তভোগী শিশুর মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত