লোকালয়ে এসে খাঁচায় বন্দি হলো লজ্জাবতী বানর

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নেত্রকোণা প্রতিনিধি

নেত্রকোণায় লোকালয়ে এসে লোহার খাঁচায় বন্দি হলো বিলুপ্ত প্রজাতির লজ্জাবতী বানর। রাতের আঁধারে প্রাণীটিকে চিনতে না পেরে অনেকেই রীতিমতো তাড়া করে খাঁচায় বন্দি করে। খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রাণীটিকে দেখতে ভিড় জমায় এলাকার উৎসুক মানুষ। এই ঘটনা নেত্রকোণার ভারতীয় সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুরের। বন্দি হওয়ার পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য এনিমেলস অব সুসংয়ের স্বেচ্ছাসেবীদের। পরে গত শুক্রবার বিকালে উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম নন্দেরছটি গ্রাম থেকে উদ্ধার ও সদর ইউনিয়নের গহীণ বনে বানরটিকে অবমুক্ত করেন তারা। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম নন্দেরছটি গ্রামে নেতাই নদীর পাড়ে গাছের উঁচু ডালে ও বৈদ্যুতিক তারে অচেনা এই প্রাণীটিকে দেখতে পায় স্থানীয়রা। টর্চের আলো ফেলতেই প্রাণীটির চোখ দুটো লাল হয়ে জ্বলতে শুরু করে। অনেকেই ভয়ে দূরে সরে যায়। আবার কেউ ধরার চেষ্টা করেন। অবশেষে আজিজুল হক নামের এক ব্যক্তি কয়েকজনকে সাথে নিয়ে প্রাণীটিকে আটক ও লোহার খাঁচায় বন্দি করেন। এ সময় আজিজুল হকের হাত কামড়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় বানরটি। আজিজুল হক বলেন, রাতের আঁধারে গাছের আগায় একটি অচেনা প্রাণী দেখতে পাই আমরা। একপর্যায়ে আমার বাসার ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় বৈদ্যুতিক তারের ওপর থেকে বাঁশের সাহায্যে মাটিতে নামিয়ে আনি এবং লোহার খাঁচায় বন্দি করি। এ সময় এই প্রাণীটি আমার হাতে কামড় দেয়। আসলে এ প্রাণী এর আগে আমরা কখনো দেখিনি। এই প্রাণীর নাম কি তাও আমাদের জানা নেই। তবে স্বেচ্ছাসেবকরা আমাদের জানান, এটির নাম লজ্জাবতী বানর। পরবর্তীতে তারা আমাদের কাছে এলে আমরা তাদের কাছে এ প্রাণীটিকে দিয়ে দিই। সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসংয়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিসুল হক সুমন জানান, বানর প্রজাতির মধ্যে লজ্জাবতী বর্তমানে বিরল একটি প্রাণী। নিশাচর এই প্রাণীগুলো মূলত রাতের আঁধারেই এক গাছ থেকে আরেক গাছে চলাফেরা করে এবং পোকামাকড় ও বিভিন্ন গাছের রস খেয়ে থাকে। অনেক সময় বনে খাদ্য সংকট হলে লোকালয়ে চলে আসে। এ সময় মানুষের নজরে এলে এই প্রাণীগুলোকে আটক করে খাঁচায় বন্দি করে কিংবা ক্ষতিকারক প্রাণী ভেবে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। এখন পর্যন্ত আমাদের সংগঠন ৪৭টি রেসকিউ অপারেশন সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করা হয়েছে ১২টি। উদ্ধারের পর উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের সহায়তায় গহীন বনে অবমুক্ত করা হয়। দুর্গাপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেওয়ান আলী জানান, সীমান্তবর্তী এ এলাকায় প্রায় সময় বানর, অজগরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ধরা পড়ে। একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার হয়েছে।