তদন্ত কমিটি গঠন
ঢাবির বিজয় একাত্তর হলের অতিথি কক্ষে শিক্ষার্থী অজ্ঞান
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের অতিথি কক্ষে গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় ওই হল শাখা ছাত্রলীগের গেস্টরুম চলাকালীন নিয়ামুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হওয়ার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে গতকাল এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন।
জানা যায়, এ সময় গেস্টরুম নিচ্ছিলেন বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি আহম্মেদের কর্মীরা। রাব্বি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিয়ামুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ সময় ধরে ছাত্রলীগের গেস্টরুম চলাকালীন রাত ১০টার দিকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এর আগে কয়েকবার গরমের কারণে তার খারাপ লাগার কথা জানালেও তাতে কর্ণপাত করেননি গেস্টরুম নেওয়া ছাত্রলীগ কর্মীরা। একপর্যায়ে, সে পড়ে গেলে তার কক্ষে নিয়ে মাথায় পানি এবং ভেজা গামছা বেঁধে দেন তার বন্ধুরা। এরপর ঘটনাটা যাতে বাইরে না যায়, সেজন্য সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসে হাসপাতালে নিতে নিরুৎসাহিত করেন। এমনকি ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠিত হলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে জোর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
যদিও এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে অস্বীকার করেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি আহম্মেদ। তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ‘কালকে কখনো কোনো গেস্টরুম নেওয়া হয়নি। আমাদের কিছু ছেলে-পেলে এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিল। তখন একটা ছেলে একটু মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তখন তার বন্ধুরা তাকে ডাবের পানি খাইয়ে তার রুমে রেখে আসে। তাকে হাসপাতালেও নিতে হয়নি, কোথাও নেওয়া হয়নি। গতকাল রাজনৈতিক কোনো প্রোগ্রামও ছিল না, কিছুই ছিল না।’
হল প্রাধ্যক্ষ ঘটনার সত্যতা জানিয়ে কমিটি গঠন করেছেন- বিষয়টি অবগত করে রাব্বির বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে জোর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে রাব্বি বলেন, ‘এরকম তো হওয়ার কথা না।’
ঘটনার সত্যতা জানার পর হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির বলেন, রাতে বিজয় একাত্তর হলে শিক্ষার্থী অচেতন হওয়ার ঘটনাটি জানার পর আমরা খোঁজ নিয়েছি এবং আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহ মিরানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- আবাসিক শিক্ষক মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসান। অধ্যাপক আব্দুল বাছির বলেন, তথাকথিত গেস্টরুমের নামে যে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটেছে, সেটির সত্যতা নিরূপণের মাধ্যমে কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে একটি রিপোর্ট জমা দেবেন। সে আলোকে আমরা ব্যবস্থা নেব।