চাঁদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী খাদিজাকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইব্রাহিম প্রধানিয়াকে যশোর থেকে আটক করেছে র্যাব। গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার পর বেনাপোল ডিগ্রি কলেজ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ইব্রাহিম চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার বকচর গ্রামের আব্দুল মোতালেব প্রাধানিয়ার ছেলে। ঈদের দিন ইব্রাহিম যৌতুকের দাবিতে তার স্ত্রীর গায়ে ডিজেল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করে।
র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, একই এলাকার খাদিজা বেগমের সাথে চার বছর আগে ইব্রাহিমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুই সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় খাদিজার উপর নির্যাতন করতো ইব্রাহিম। তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে ফার্নিচার নিয়ে আসার জন্য স্বামী ও শাশুড়ি বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করত। একই সাথে মাঝে মধ্যে শারীরিক নির্যাতন করত। খাদিজার বাবা হতদরিদ্র হওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে দাবিকৃত ফার্নিচার দিতে না পারায় খাদিজাকে শারীরিক নির্যাতন করা হতো। ফলে এলাকায় স্থানীয় মেম্বার ও মুরব্বীদের নিয়ে একাধিকবার সালিশি বৈঠক করা হয়। সালিশি বৈঠকে ভিকটিমের স্বামী ইব্রাহিম ও শাশুড়ি খাদিজার সাথে ভালো ব্যবহার করার অঙ্গিকার করলেও পরবর্তীতে তারা আবারো বিভিন্ন অজুহাতে খাদিজাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। এর মধ্যে ঈদুল ফিতরের দিন বাজার না করায় ইব্রাহিমের সাথে খাদিজার কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে খাদিজার গায়ে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পাালিয়ে যায়। ততক্ষণে খাদিজার প্রায় সম্পূর্ণ শরীর আগুনে পুড়ে যায়। স্থানীয় প্রতিবেশীরা খাদিজাকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর মেডিকেলে ভর্তি করে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল মধ্য রাতে সেখানে তার মৃত্যু হয়। ঘটনাটি স্পর্শকাতর ও হৃদয়বিদারক হওয়ায় সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় খাদিজার বাবা খোকন মিয়া মতলেব দক্ষিণ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ইব্রাহিমের মাকে আটক করে। কিন্তু পালিয়ে যায় ইব্রাহিম। র্যাব জানতে পারে ইব্রাহিম বেনাপোল ডিগ্রি কলেজ এলাকায় তার এক আত্মীয়র বাড়ি অবস্থান করছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাকে আটক করা হয়।