ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেশে চাহিদার চেয়ে .৯৫ টন বেশি মাছ উৎপাদন হয়

দেশে চাহিদার চেয়ে .৯৫ টন বেশি মাছ উৎপাদন হয়

সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ ২৫তম, মাছ উৎপাদনে পঞ্চম, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম, তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ ও মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে তৃতীয়। দেশে মাছের চাহিদা ৪৬.৬৪ মেট্রিক টন এবং উৎপাদন ৪৭. ৫৯ মেট্রিক টন। অর্থ্যাৎ চাহিদার চেয়ে .৯৫ মেট্রিক টন মাছ বেশি উৎপাদন হয়। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ‘উপকূলীয় অঞ্চলে মৎস্য সম্পদের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার এ তথ্য জানানো হয়। গতকাল খুলনা গল্লামারী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, চিংড়ি চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু চিংড়ি চাষে মানুষ অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সরকারের সঠিক পদক্ষেপের ফলে মৎস্য সেক্টর অনেক এগিয়ে গেছে। জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য খাতের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন মাছ হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক সম্পদ।

মেয়র বলেন, মাছ উৎপাদনে ক্ষতিকর বিষ ও রাসায়নিক দ্রব্য পুশ থেকে বিরত থাকতে হবে। বিষ দিয়ে এখনো মাছ ধ্বংস করা হচ্ছে। আমরা দেশীয় মাছগুলো প্রায় হারিয়ে ফেলতে বসেছি। দেশীয় মাছ সংরক্ষণ, উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান থাকা প্রয়োজন। পরিবেশ ও প্রতিবেশ ক্ষতি করে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। সব কাজে পরিকল্পনা থাকা দরকার, পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ করতে হবে। কৃষিকে ধরে রেখে মাছ চাষ করতে হবে। যে অঞ্চল মাছ চাষের জন্য নির্ধারিত সেখানেই মাছ চাষ করতে হবে। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. রাশীদুজ্জামান, খুলনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর। এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মীর আলিফ রেজা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আল-বেরুনী ও প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম।

উপকূলীয় অঞ্চলের পানি পরিবেশ ও চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান ও উপকূলীয় অঞ্চলে মৎস্য সম্পদের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল। খুলনা জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেমিনারে আরো জানানো হয়, চিংড়ি উৎপাদন ২ লাখ ৬১ হাজার ১৫৪ মেট্রিক টন, চাষকৃত চিংড়ি ১ লাখ ৪৫ হাজার ২১৩ মেট্রিক টন, চিংড়ি মাছ রপ্তানি ৩০ হাজার ৫৭১ মেট্রিক টন। মৎস্য ও মৎসজাত পণ্য রপ্তানি ৭৪ হাজার ৪৩ মেট্রিক টন, মৎস্য ও মৎসজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় ৫ হাজার ১৯১.৭৬ কোটি টাকা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ১৯.৫ লাখ মিলিয়ন বা ১২ শতাংশ। জিডিপিতে মৎস্য সেক্টরে অবদান ২.৪৩ শতাংশ, কৃষি খাতে অবদান ২২.১৪ শতাংশ। জনপ্রতি বার্ষিক মাছ গ্রহণ ২৫ কেজি এবং জনপ্রতি বার্ষিক মাছের চাহিদা ২৩.৭২ কেজি। সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারে টেকসই মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন ৪৯.৫৯ লাখ মেট্রিক টন থেকে ৫৮.৪০ লাখ মেট্রিক টনে উন্নতিকরণ এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণে জনপ্রতি মাছ গ্রহণের পরিমাণ ৬৭.৮০ গ্রাম থেকে ৭৫ গ্রামে উন্নিত করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত