রাজধানীর সূত্রাপুরের আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে আগামী ৪ জুন রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গতকাল রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করে আদেশ দেয়। বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন- বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। মামলাটি গতকাল আপিল বিভাগের এ বেঞ্চে শুনানির জন্য ১নং ক্রমিকে ছিল। শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে দেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সারোয়ার আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। অপু হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে ২০১৮ সালের মে মাসে রায় দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে খালাস এবং অপর দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি হাইকোর্ট। মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামি হলেন- মঞ্জুরুল আবেদীন রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিন। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্না ও ইফতেখার বেগ ঝলককে খালাস দেয়া হয়। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি মাহবুব আলম ও বিপ্লব চন্দ্র দাস পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি উচ্চ আদালত। বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন। পরে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। একই সঙ্গে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসি ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা। ২০০৮ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় সূত্রাপুর থানার ৪/১ ওয়ারী হেয়ার স্ট্রিটের বাসা থেকে সন্ত্রাসিরা অ্যাডভোকেট রইস উদ্দিনের ছেলে ও আশিকুর রহমান খান অপুর ভাই আরিফুর রহমান খান সেতুকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারতে মারতে স্থানীয় সিলভারডেল স্কুলের মাঠে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আশিকুর রহমান খান অপু ও আতিকুর রহমান খান বাপ্পী সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের এলোপাতাড়ি গুলি করে। এরপর তারা তিন ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে গুলি করতে করতে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন মারাত্মক আহত অবস্থায় তিন ভাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক অপুকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুই ভাই বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। এ ঘটনায় নিহতের বোন আতিয়া খান কেয়া বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।