২০৫০ সালের মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ২০৫০ সালের মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বক্তারা। গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মুনীর চৌধুরী মিলনায়তনে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা) ও ঢাবি পরিবেশ সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

পরিজার সভাপতি প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন, পরিজার সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, পরিজার সহ-সভাপতি ক্যামেলিয়া চৌধুরী, ঢাবি পরিবেশ সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রাশেদ, লেখক ও গবেষক অপূর্ব কুমার দাশ, পুরান ঢাকার নেতা জিএম রুস্তম খান, মো. ইব্রাহীম প্রমুখ। আলোচনা সভায় ধারণাপত্র উত্থাপন করেন প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান ও সঞ্চালনা করেন আমির হাসান মাসুদ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব ও পদ্মা নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ ভারত নিয়ন্ত্রণ করার কারণে নদীর নাব্য হারিয়ে জেগে উঠেছে বিশাল বিশাল চর। পানির স্তর বছরে গড়ে স্থানভেদে দুই থেকে তিন ফুট করে নিচে নেমে যাচ্ছে। এই হার অব্যাহত থাকলে আগামী ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে এই অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে মরুভূমিতে পরিণত হবে। পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা না হলে ভাঙনের কারণে নদীর প্রশস্ততা আরো ব্যাপকভাবে বাড়বে। শুষ্ক মৌসুমে ভারতের একতরফা পদ্মার পানি প্রত্যাহারের ফলে বরেন্দ্র এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হবে জানিয়ে তারা বলেন, ভাটির দেশ হিসেবে অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় আমাদের দেশে পানির সংকট আরো ঘনিভূত হচ্ছে এবং নৌ চলাচল, সেচব্যবস্থা ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে, উত্তরাঞ্চলের নদীগুলো শুষ্ক বালুচরে পরিণত হয়েছে। দেশের প্রায় ১৪০টি নদ-নদী এখন মৃত প্রায়। দেশের প্রায় ১৩টি নদীর অস্তিত্ব এখন বিলীনের পথে। এভাবে চলতে থাকলে দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে এসব নদী। মো. আবদুস সোবহান বলেন, আমাদের বায়ু নিশ্বাসযোগ্য রাখার পাশাপাশি, জীববৈচিত্র্য, খাদ্য, পানি সরবরাহ, ওষুধ, পোশাক-পরিচ্ছদ, আশ্রয়স্থলের জোগান দিচ্ছে। জীববৈচিত্র্য হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ চলনশক্তি। বিশ্ব অর্থনীতির ৪০ শতাংশ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চাহিদার ৮০ শতাংশ আসে জৈব সম্পদ থেকে। মানবতার ভাগ্য, কল্যাণ সুদৃঢ়ভাবে জৈববৈচিত্র্যের সঙ্গে জড়িত। বর্তমান বিশ্বের সব প্রাণীর খাদ্য নিরাপত্তা আজ হুমকির সম্মুখীন। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষেণের মাধ্যমে সব প্রাণীর খাদ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করা সম্ভব।