রামু উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কক্সবাজারের রামু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার ও নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে একজন প্রার্থীর পক্ষে ভূমিকা রাখছে জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল। এমন অভিযোগ করেছেন রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহেল সরওয়ার কাজল ও তার ছোট বোন জেলা আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরী।

তারা দুজনই হুইপ সাইমুম সরোয়ার কমলের আপন বড় ভাই ও ছোট বোন। গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের একটি মোটেলের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করা হয়। লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি আসন্ন রামু উপজেলা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ভূট্টোর পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং একই সময়ে সরকারি নিরাপত্তা প্রটোকলও ব্যবহার করেছেন। যা নির্বাচনি আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এ পরিস্থিতিতে রামু উপজেলায় সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ১৩ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে হুইপ নিজের বাসভবন ওসমান ভবনকে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ভুট্টোর নির্বাচনি কার্যালয়ে পরিণত করে, সেখান থেকে প্রচার-প্রচারণা ও ভোটের যাবতীয় কলাকৌশল পরিচালনা করছেন। একই সঙ্গে এলাকায় প্রকাশ্যে আমার কর্মী-সমর্থকদের বিভিন্ন হুমকি-ধমকি প্রদান করছেন। আমার নিবেদিত কর্মীদের বাসায় ডেকে নিয়ে মারধর ও অমানুষিক নির্যাতন করছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অস্ত্রধারীদের লেলিয়ে দিয়ে ভোটারকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করবে, পরিকল্পিতভাবে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অফিস ও পোষ্টার পুড়িয়ে দিয়ে আমিসহ আমার কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা করবে, ভোট কেন্দ্রে আমার এজেন্ট প্রবেশ করতে দেবে না মর্মে নানা হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সাধারণ নেতাকর্মী ও ভোটারদের আতঙ্কগ্রস্ত করছে। এমনকি হুইপ কমল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ইভিএম মেশিনের মেমোরি কার্ড পরিবর্তন করে সুক্ষ্ম কারচুপির মাধ্যমে আমার পরাজয় নিশ্চিত করবেন বলেও বিভিন্নভাবে জানান দিচ্ছে।

এলাকার আমার জনপ্রিয়তা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে আমার বিজয় সুনিশ্চত জেনে তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের নিদের্শনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এমতাবস্থায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচনকালীন এলাকা থেকে হুইপ কমলকে সরিয়ে নেয়াসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।

আওয়ামী লীগের নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, আমার ভাই হুইপ কমল ইভিএমের মাধ্যমে রেজাল্ট পাল্টে দেওয়ার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হুমকি দিচ্ছে। এতে পুরো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে। তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমলের মারধরের শিকার তাঁতী লীগ নেতা মো. শাহাজালাল জানান, তিনি স্বীকৃত রাজাকার পুত্র ও সাবেক বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম ভূট্টোর পক্ষ অবলম্বন না করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজলের পক্ষে কাজ করায় তার প্রতি ক্ষিপ্ত হন হুইপ। এরই সূত্র ধরে হুইপ কমল তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে মারধর করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল ও ছোট বোন জেলা আওয়ামী লীগের নেত্রী নাজরিন সরওয়ার কাবেরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামশুল আলম মন্ডল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল, জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান কামাল সামশুদ্দিন প্রিন্স, কাউয়ারখোপ সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ, রামু আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হক চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে হুইপ সাইমুম সরোয়ার কমলের মুঠোফোনে কল করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।