সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গত শনিবার রাতে আরো ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’ পরিণত হওয়ার কথা। এর প্রভাবে ৫ থেকে ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল বিকাল হতে মধ্যরাত অবধি এটি উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে কক্সবাজারে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট পানি বেড়েছে। উপকূলের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছ।
এ অবস্থায় ‘রেমালে’ মোকাবিলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে ৬৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্র। সরকারি বা স্বায়ত্তশাষিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল বিকাল হতে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। তৈরি রাখা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক ও মেডিকেল টিম। মজুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার। বরাদ্দ রাখা হয়েছে নগদ টাকা। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
গতকাল বিকাল ৫টায় জেলা প্রশাসনের জাফর আলম সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দুর্যোগকালীন সময় সাধারণ মানুষের জন্য খাবারের পাশাপাশি সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।
সভায়, কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান জানান, ৭ নম্বর বুলেটিন অনুযায়ি গভীর নিম্নচাপটি গতকাল বিকেল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার হতে পারে, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
তিনি বলেন, গত শনিবার মধ্যরাতে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর হতে পারে। এরপর ধীরে ধীরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে রোববার বিকাল হতে শুরু হতে মধ্যরাতে সেটি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এটি কক্সবাজার তেমন আঘাত হানার সম্ভবনা না থাকলেও এ সময় প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও সাগরে পানির উচ্চতাও বাড়াতে পারে। ঘটতে পারে পাহাড় ধসও।