সিরাজগঞ্জে মহিলা দাখিল মাদ্রাসা
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ ১৩ জনকে কারণ দর্শানো নির্দেশ
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার হরিণাহাটা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সুপার (সদস্য সচিব) ফরিদুল ইসলামসহ বিবাদীগণকে কেন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করা হবে না এই মর্মে নোটিশ প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত। যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতের বিচারক নাদিরা সুলতানা গত সোমবার এ আদেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম রাখাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি মামলার বাদীদের বরাদ দিয়ে জানান, ওই মাদ্রাসার সুপার ২নং বিবাদীর যোগসাজশে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে পাতানো নির্বাচন দেখিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ১৫নং বিবাদী দ্বারা ওই ম্যানেজিং কমটি অনুমোদন করে এবং গত ১৯/০২/২০২৪ তারিখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে ১৫নং বিবাদীর অফিসে বসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাচমেন্ট এরিয়ার বাহিরের লোক ১নং বিবাদী মঞ্জুরুল ইসলামকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৭ কিমি. দূরে খাগা গ্রামে। এর আগে ১২নং বিবাদী গত ২৫ জানুয়ারি তারিখে একটি নির্বাচনি তপশিল ঘোষণা করে। তপশিল অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে ৭ ফেব্রুয়ারি এবং নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে ১৭ ফেব্রুয়ারি। ওই তপশিল কোনো শ্রেণিকক্ষে পাঠ করে শোনানো বা নোটিশ বোর্ডে টানানো হয়নি। তপশিল ভোটার তালিকা গোপন করে প্রতিটি পদে ২নং বিবাদী মনমতো লোকদের সমন্বয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করে তাদের নির্বাচিত দেখায়। এ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসহ কয়েকজন সদস্য নিজেরাই ওই ম্যানেজিং কমিটির সম্পর্কে অবহিত নয়। বেআইনিভাবে তৈরি ভোটার তালিকা দ্বারা মনগড়াভাবে ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচন করে জাল সহি স্বাক্ষর করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায়। ওই ম্যানেজিং কমিটির ১৫নং বিবাদী স্বাক্ষর করে ওই ভুয়া ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন করে। ওই মাদ্রাসার ইবতেদায়ি শাখায় বিভিন্ন শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি দেখিয়ে অভিভাবক সদস্য ও মনগড়া ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়। এ ভোটার তালিকায় ১০ম শ্রেণি বাদ রাখা হয়েছে এবং ইবতেদায়ি শাখার দ্বিতীয় শ্রেণিতে ছাত্র রিফাতকে ভর্তি দেখিয়ে তার পিতাকে ওই কমিটির অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত দেখানো হয়। তার প্রকৃত গ্রামের বাড়ি রঘুরগাঁতী এবং তাকে চাঁদপাল গ্রামে দেখানো হয়েছে। ওই মাদ্রাসার পাশেই একই এরিয়ার মধ্যে হরিণাহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত এবং সেখানে যে কোনো প্রকার ছাত্রছাত্রীর লেখাপড়ার সুযোগ আছে। অপরদিকে বিধান মোতাবেক মহিলা মাদ্রাসায় কোনো ছাত্র ভর্তি করার সুযোগ নেই। তথাপি ২নং বিবাদী ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের মনমতো ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ছাত্রদের ভর্তি দেখিয়ে অভিভাবকগণ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে এবং এ মামলার বাদীগণকে অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত করা হয়নি। বিবাদীগণ ওই মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্য যেসব পদ শূন্য আছে সেই সব শূন্য পদে বিপুল অর্থ নিয়ে নিয়োগ দানের জন্য নানা প্রকার ষড়যন্ত্র করছে এবং নানা প্রকার অনিয়ম করছে। ১-১৩ নম্বর বিবাদীগণ যাতে ওই মাদ্রাসার কোনো পদে কোনোভাবে কোনো নিয়োগ দিতে না পারে সেজন্য বিবাদীগণের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ চাওয়া হয়। ওই গ্রামের আব্দুল মান্নানসহ তিনজন বাদী হয়ে এসব অভিযোগের সুবিচার চেয়ে গত ১৬ মে এ মামলা দায়ের করেন। গত সোমবার এ মামলার শুনানির পর আদালত উল্লেখিত আদেশ দেন।