ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইসরায়েল-হামাস সংঘাত

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১৪টি দেশই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। তবে ভোটদানে বিরত ছিল রাশিয়া। গত ৩১ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তিন ধাপের প্রস্তাবটি উন্মোচন করেন।

শান্তিচুক্তির জন্য সমর্থন আদায়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুসহ বেশ কয়েকটি দেশের নেতাদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বৈঠকের পরপরই জাতিসংঘে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার খবর পাওয়া গেল। প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রস্তাবে শর্ত হিসেবে রাখা হয়েছে- পূর্ণ যুদ্ধবিরতি, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি, নিহত জিম্মিদের দেহাবশেষ ফেরত দেওয়া ও ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়। ইসরায়েল এরই মধ্যে এই প্রস্তাবে রাজি আছে বলে জানানো হয়েছে। হামাসকেও এই প্রস্তাবে রাজি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

এদিকে, পাস হওয়া যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। সংগঠনটি বলেছে- এই প্রস্তাবের নীতিগুলো আমাদের ও ফিলিস্তিনি জনগণের দাবির সঙ্গে মেলে। তাই এই প্রস্তাবের শর্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার পাশাপাশি সহযোগিতাও করবো আমরা। জাতিসংঘে ভোটাভুটির মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই আরব নেতাদের উদ্দেশে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন বলেন, যদি যুদ্ধবিরতি চান, তাহলে হামাসের উপরে চাপ দিন। ইসরায়েল এরই মধ্যে তাদের সম্মতি জানিয়ে দিয়েছে। এর আগে হামাস বলেছিল, তারা এই যুদ্ধবিতরতির প্রস্তাবের কিছু অংশ সমর্থন করে। ধারণা করা যায়, হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা উপত্যকা থেকে পুরোপুরিভাবে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা চাইবে।

অবশ্য কাতারের দোহায় অবস্থানকারী হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটির বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা। প্রস্তাবটি গৃহীত হলে সংঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজার পুনর্নির্মাণে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের একটি খসড়া থেকে জানা যায়, তিন ধাপের মধ্যে প্রথম ধাপে জিম্মি-বন্দি বিনিময় ও স্বল্প মেয়াদের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। স্থায়ীভাবে সংঘাতের অবসান ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার রাখা হয়েছে দ্বিতীয় ধাপে। তৃতীয় ধাপটিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে গাজায় কয়েক বছরব্যাপী পুনর্নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কয়েক সপ্তাহ আগেই বলেছিলেন, ইসরায়েলি জনগণ এই প্রস্তাবে রাজি। কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এখনো এই প্রস্তাবে সমর্থন জানাননি। এদিকে, বাইডেন যখন শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে ইসরায়েলি প্রচেষ্টা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন, একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলের ভঙ্গুর জোট সরকারের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে, যার মধ্যে অনেকেই যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবে যেতে অনাগ্রহী। ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থি মন্ত্রীরা এমন হুমকি দিচ্ছেন যে, যদি নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবের অধীনে থাকা চুক্তিগুলো কার্যকর করেন, তাহলে তার সরকারকে অচল করে দেওয়া হবে। দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে সাবেক জেনারেল বেনি গান্তজের পদত্যাগ সেই অস্থিতিশীলতার শঙ্কা আরো উসকে দিয়েছে। সূত্র : বিবিসি

জাতিসংঘ সমর্থিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হামাস

গাজাযুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের সমর্থিত একটি প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। অর্থাৎ, এ ব্যাপারে আলোচনায় একমত হয়েছে সংগঠনটি। গতকাল হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। তাদের এই অবস্থানকে আশার আলো হিসেবে দেখছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

তেল আবিবে ইসরায়েলি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজা নিয়ে কি পরিকল্পনা করা হবে সে বিষয়ে আলোচনা চলবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হয়েছে। এর এক দিন পরেই আট মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েল সফরে যান ব্লিঙ্কেন। কারণ ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। যদিও এর আগে মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে নেতানিয়াহুসহ ইসরায়েলি নেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। নেতানিয়াহু বলেছেন, যে কোনো চুক্তিতেই হামাসকে উৎখাতের অনুমোদন দিতে হবে। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। দফায় দফায় হামলা চালিয়ে তাদের নিরাপদ আশ্রয় কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার এমন কোনো স্থান বাকি নেই যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়নি। এরই মধ্যে সেখানে ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সূত্র : আল-জাজিরা

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত