আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রথখোলায় শহরের প্রধান কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। গরু, মহিষকে সুসজ্জিত সারিবদ্ধ করে রাখার জন্য হাটের মাঠটিতে বাঁশের খুঁটি বসিয়ে লম্বা লম্বা সারি করা হয়েছে। এছাড়া ছাগল ও বেড়া জন্য সুনির্দিষ্ট জায়গা দেয়া হয়েছে। জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলা এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা গরু, মহিষ, ছাগল বেড়া নিয়ে এসেছে এ হাটে। গতকাল শুক্রবার সরেজমিন গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী এস এম শফিকুল আযম জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন গরুর হাটগুলো ইজাদারের মাধ্যমে অত্যন্ত সুন্দর মনমুগ্ধ পরিবেশে হচ্ছে। এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারি বিধিবিধান অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে ইজাদারদের দিয়ে হাটগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে। এখানে সবই করা হয়েছে আইন মেনে। মাননীয় মেয়র মহোদয় ও মেয়র মহোদয়ের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা সিটি কলেজ করপোরেশনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করছি, যাতে সুন্দরভাবে ক্রেতারা মাঠ থেকে গরু কিনে বাড়ি নিয়ে যেতে পারে। পাইকাররাও যাতে নিরাপত্তার মধ্যে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
হাটের ইজারাদার গাজীপুর জেলা পরিষদের সদস্য (সদ্য সর্ণপদক প্রাপ্ত) বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, গত দুই বছর রথমেলার কারণে শহরের এই মাঠটিতে কোরবানির পশুর হাট বসতে পারেনি। এবার ঈদুল আযহার ২০ দিন পর রথমেলা অনুষ্ঠিত হবে। এতে জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় শহরের এই প্রাণকেন্দ্রে পূর্বের মতো আমরা কোরবানির পশুর হাট বসাতে পেরেছি। হাটটিতে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতা রয়েছে। আমরা হাটটিতে গরু, মহিষ, ছাগল ও বেড়া রাখার যেমন সুব্যবস্থা তৈরি করেছি, তেমনি বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত পাইকারদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা রেখেছি। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সুবিধার্থে আমরা সরকার নির্ধারিত হাসিল থেকে কম হাসিল নিচ্ছি। আমাদের এই হাটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারদের পশু নিয়ে আসার আহবান জানাই।
আবু হানিফ আরো বলেন, এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিটি করপোরেশনের প্রতিটি কোরবানির হাটের ইজারার বন্ধোবস্ত করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার অনিয়ম হয়নি। সুষ্ঠুভাবে হাট পরিচালনা করতে পারায় আমরা সকল ইজারাদারদের পক্ষ থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনর মেয়র মহোদয়, মেয়রের উপদেষ্টা মহোদয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
এদিকে ময়মনসিংহ থেকে কালা চাঁন বেপারী এ হাটে ২০টি গরু নিয়ে আসেন। তিনি প্রতিবেদকে জানান, হাটের সুসজ্জিত পরিবেশ ও নিরাপত্তা দেখে আমি অনেক সন্তুষ্ট। ইজারাদারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। হাটের বিক্রিও জমেছে। ক্রেতাদের আনাগোনা বেশ। অনেকে গরুর দরদাম করছেন। গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক পাইকাররা তাদের সুবিধা মতো দাম হাকছেন। আমরা পাইকাররা এ হাটের পরিবেশ নিয়ে আনন্দিত। আশা করছি ভালোভাবেই গরু বিক্রি করতে পারব।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা নরুজ্জামান মৃধা বলেন, প্রতি বারের মতো সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া টেন্ডারের মাধ্যমে এবার ১৩ টি কোরবানির হাটের ইজারার বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুন ও সিটি করপোরেশনের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমের দিকনির্দেশনায় সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি হাটে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারে কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৩ হাটেই নিরাপত্তার কারণে জমজমটা পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। হাশিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৫ শতাংশ হাসিল নির্ধারিত। তবে কোনো ইজারাদর যদি কম হাসিল নেন, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু ৫ শতাংশের ওপর হাসিল নিতে পারবে না।