ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর

কুড়িগ্রামে প্রধান ৪ নদী তিস্তা, দুধকুমার, ব্র্রহ্মপুত্র ও ধরলাসহ ১৬ নদীর পানি প্রতিদিনই বেড়েই চলছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি হয়েছে। গতকাল তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অফিস সূত্র জানায়, তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি ফুলবাড়ির শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি জানান, গতকাল বিকাল ৩টায় দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি সামান্য কমে এখন বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি ২৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি ফুলবাড়ি উপজেলার শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অন্যান্য সবগুলো নদনদীর পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যদিকে নদীর পানি বাড়ার কারণে তিস্তা ও ধরলা নদীসহ অন্যান্য নদনদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ১০ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন কাঁচা সড়ক। অনেকেই কলার গাছের ভেলা দিয়ে বাড়িতে যাতায়াত করছে। ডুবে গেছে বাদাম, পাটখেত, ভুট্টা, মরিচ ও শাকসবজি খেতসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল। এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষরা পড়েছেন বিপাকে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, দুর্যোগকবলিত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ১৪৪ মে. টন জিআর চাল এবং নগদ ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তা বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। নতুন করে ঢাকা থেকে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা, ৯ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার এবং ৫০০ মে. টন চাল। গতকাল সকালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ওয়েস্ট রিজিওন) এ কে এম তাহমিদুল ইসলাম উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জসহ বিভিন্ন ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, একদিকে বন্যা আবার আর একদিকে নদীভাঙন এ জেলার জন্য দুর্ভাগ্য। এ জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট বড় ১৬টি নদনদীর সবগুলোই ভাঙনপ্রবণ। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার সবচেয়ে বেশি বিধ্বংসী ভাঙনপ্রবণ। নদীভাঙন প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করার বিষয়ে আশ্বাস দেন তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত