পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য

৫৮ শতাংশ মানুষ ঋণ করে স্বপ্নের বিদেশে যায়

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের মোট অভিবাসীর মধ্যে ৫৮ দশমিক ২৪ শতাংশ ঋণ করে প্রবাসে যান। এর মধ্যে গ্রামের ৬০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ আর শহরের ৫১ দশমিক ৮৩ শতাংশ মানুষ রয়েছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) আর্থসামাজিক ও জনমিতিক জরিপ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঋণ করে প্রবাসে যাওয়া কর্মীদের মধ্যে ৫৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ পুরুষ রয়েছেন। আর নারীর হার ৩৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বরিশাল বিভাগের অভিবাসীদের মধ্যে ঋণ করে অভিবাসন বাবদ ব্যয় নির্বাহের হার সর্বোচ্চ, ৬৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। অন্যদিকে সিলেটে সর্বনিম্ন ৪৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

জরিপে দেখা গেছে, অভিবাসন ব্যয় মেটানোর জন্য ঋণ গ্রহণ করেছেন জাতীয় পর্যায়ে ৫৮ দশমিক ২৪ শতাংশ, গ্রামে ৬০ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং শহর এলাকার ৫১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিদেশ যাওয়ার আগে এনজিও, ব্যাংক, জমি বন্ধক ও চড়া সুদে ঋণ করেন প্রবাসীরা। এতে প্রকারভেদে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, জমির দলিল, ভিসা ও পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিতে হয়। তার বিনিময়ে মেলে লাখ টাকা। সেই টাকায় দালালদের মাধ্যমে বিদেশে যান প্রবাসীরা। এরপরই শুরু হয় ঝামেলা। এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হলে বাড়ির গরু-ছাগল, গহনা ও জমি বিক্রির চাপ দেওয়া হয়। এ ছাড়া নানা ভয়ভীতি দেখানো হয়। বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগীরা নিজের শেষ সম্বল বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করেন। এলাকার প্রভাবশালীরা এসব কাজে জড়িত বলে জানিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী। বিদেশগামী মানুষদের স্বপ্নকে কাজে লাগিয়ে চড়া সুদে টাকা দিয়ে থাকে কারবারিরা। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋণ করে হলেও বিদেশে যেতে পারলেই বদলাবে ভাগ্যের চাকা, অল্প দিনেই হওয়া যাবে বিত্তবৈভবের মালিক। সচ্ছলতা ফিরবে সংসারে, হওয়া যাবে বাড়ি-গাড়ির মালিক। এমন রঙিন স্বপ্নে বিভর হয়ে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ বিদেশে পাড়ি জমান। তবে অনেকের স্বপ্নই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়।

মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের একাধিক যুবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদেশযাত্রায় মোটা অঙ্কের টাকা জোগাড়ে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ভিসা বা পাসপোর্টের ফটোকপি, জমির দলিল জমা ও স্ট্যাম্পে সই দিলেই প্রথম পর্যায়ে চড়া সুদে মিলে ৪-৫ লাখ টাকা।