দেশের পর্যটন স্পটগুলোতে বিচরণ করা যানবাহন চালকদের আচরণের উপর নির্ভর করে পর্যটন খাতের উন্নতি কিংবা অবনতি। প্রত্যেক চালক একেকজন ভ্রমণ নির্দেশনাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখে। সর্বোপরি পর্যটন এলাকার সুনাম ও দুর্নাম চালকদের হাতে বলে মন্তব্য করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী। গত রোববার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে কক্সবাজারে কর্মরত চালকদের নিয়ে আয়োজিত ‘ট্রান্সপোর্ট পার্টনার্স মিট’-২০২৪ নামের একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল সী পার্ল ওয়াটার পার্ক। এতে চাঁন্দের গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকসহ (টমটম) বিভিন্ন যানবাহনের ২৫০ জন চালক উপস্থিত ছিলেন। মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পর্যটনের অ্যাম্বাসেডর হলো চালকরা। হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা প্রথম স্টেকহোল্ডার হলে, পরিবহন খাত হলো দ্বিতীয় স্টেকহোল্ডার। বিশেষ করে কক্সবাজারে ট্যুরিস্ট গাইড নেই। চালকরাই হলো এখানকার ট্যুরিস্ট গাইড। পর্যটকরা বিভিন্ন স্থান সম্পর্কে চালকদের কাছ থেকে জেনে নেন। এক্ষেত্রে চালকদের মার্জিত আচরণ খুবই প্রয়োজন। চালকদের আচরণে পর্যটক সন্তুষ্ট হলে দেশি-বিদেশি পর্যটক কক্সবাজারমুখী হবে। এতে পর্যটন খাতে শতভাগ সফলতার সম্ভাবনা থাকে। সী পার্ল বিচ রিসোর্টের গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার আজিম শাহ বলেন, পর্যটন সংশ্লিষ্টরা হলো পর্যটনের প্রাণ। পর্যটন খাতে উন্নয়নে তাদের যথেষ্ট ভূমিকা থাকে। কক্সবাজারে যাত পর্যটক আসবে যানবাহন খাতসহ বিভিন্ন খাতে তত আয় বাড়বে। তাই পর্যটক বৃদ্ধির জন্য পর্যটন সংশ্লিষ্টদের সুন্দর আচরণের বিকল্প নেই। তাদের আচরণে মুগ্ধ হলে পর্যটকরা কক্সবাজার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেবে না। তারা বারবার এই সমুদ্রশহরে আসবে। ফলে পর্যটন খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এতে করে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের লক্ষ্য পূরণ হবে। একই সঙ্গে দারিদ্র্য বিমোচন হবে। রোহিঙ্গা চালকদের কারণে পর্যটন খাতে ক্ষতি হচ্ছে মন্তব্য করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নিজের দেশের মানুষের জীবিকার জন্য কিছু করতে পারছি না আমরা। সেখানে যানবাহনের মালিকরা রোহিঙ্গা চালকদের গাড়ি ভাড়া দেয়। এসব রোহিঙ্গা চালকরা স্থানীয়দের কর্মস্থল দখল করে নিচ্ছে। তারা পর্যটকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। অথচ আমরা ভাবি না রোহিঙ্গারা বড় ধরনের অপরাধ করে ক্যাম্পে ঢুকে গেলে তাদের খোঁজার কেউ নেই। তাই কক্সবাজারকে পর্যটনবান্ধব করতে হলে রোহিঙ্গা চালকমুক্ত শহর করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আগের চেয়ে এখন অনেককিছু শৃঙ্খলার মধ্যে এসেছে। এক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশকে চালকরা সহযোগিতা করছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতিমাসে সেরা চালক নির্বাচিত করে মূল্যায়ন করা হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কক্সবাজারের পর্যটনকে এগিয়ে নিতে হবে। অনুষ্ঠানে অন্যানদের মধ্যে স্বপ্নীল সিন্ধুর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান, সী পার্লের গ্রুপ ডিরেক্টর এমএ আউয়াল, ওয়াটার পার্কের ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, চাঁন্দের গাড়ি চালক সমিতির সভাপতি জামাল উদ্দিন, পরিবহন শ্রমিক নেতা রুহুল কাদের মানিকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।