সিরাজগঞ্জে ট্রাক চালক হেলপারকে অপহরণ ও চাঁদা দাবি মামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫ জনকে ২১ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসাথে ওই ট্রাকে লুট হওয়া ২৫২ বস্তা পেঁয়াজ কেনার দায়ে এক ব্যবসায়ীকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া পৃথক ধারায় আসামিদের জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম আলী আহামেদ এ রায় দেন। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামি পলাতক ছিল। তারা হলো, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এসআই মাইনুল হাসান, সলঙ্গা থানার সাবেক এএসআই মতিউর রহমান খান, একই থানার পাটধারী গ্রামের শীতল প্রামানিকের ছেলে রেজাউল করিম রনি, হাসানপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে সবুজ আলী ও বাগদা গ্রামের বাহাজ উদ্দিনের ছেলে আনিস ড্রাইভার। এ মামলার ২ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামের নান্নু মণ্ডলের ছেলে সাব্বির আলম সবুজ। ওই আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের ওই ২ কর্মকর্তাসহ ওই ৫ জনকে পেনাল কোডের ৩৬৫ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছর কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাস বিনাশ্রম করাদণ্ড দেয়া হয়। পেনাল কোডের ৩৯২ ধারায় একই আসামিদের ১৪ বছর কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ মাস বিনাশ্রম করাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। আসামি সবুজকে পেনাল কোডের ৪১১ ধারায় ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন বিচারক। তিনি মামলার বিবরণে আরো জানান, ২০১৭ সালের ১০ জুলাই রাতে ২৫২ বস্তা পেঁয়াজসহ একটি ট্রাক চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদবন্দর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পরদিন দুপুরের দিকে ওই ট্রাকের চালক মোরশেদ আলী ট্রাক মালিক মুজিবুর রহমানকে ফোনে জানানো হয় সলঙ্গা থানা এলাকার সমবায় পেট্রল পাম্পের কাছে হেলপারসহ তাকে আটক করেছে পুলিশ। একটি প্রাইভেট কারে তাদের তুলে শহরের অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ট্রাকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় শিয়ালকোল বিসিক এলাকা থেকে উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে ট্রাক মালিক রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন। পুলিশ এ মামলার তদন্তে সবুজ আলীকে গ্রেপ্তার করে এবং তিনি বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরবর্তীতে তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই ২ পুলিশ কর্মকর্তাসহ বাকি আসামিদের নাম। তদন্ত শেষে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। এ মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন।