উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন

উপ-নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা

আগামী ২৭ জুলাই কক্সবাজারের উখিয়া সদর রাজাপালং ইউপির অনুষ্ঠিতব্য উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলম, উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব সাদমান জামি চৌধুরী, উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসাইন মিথুন ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক চৌধুরী।

উল্লেখ্য, উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে পদত্যাগপত্র জমা দেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী। উপ-নির্বাচনে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ৪ জুলাই। যাচাই-বাছাই ৫ জুলাই। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ জুলাই। আপিল নিষ্পত্তি ৯ জুলাই। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১০ জুলাই। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১১ জুলাই। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ১৫টি ভোট কেন্দ্রে ১০১ বুথে ২৭ জুলাই সকাল ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গেল ২৯ মে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ‘চেয়ারম্যান’ পদ থেকে পদত্যাগ করেন টানা তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। এর পরে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয়ে পড়লে নির্বাচন কমিশন গত ২৭ জুন উপনির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে। উখিয়ার সদর রাজাপালং ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে ৪২৫৯৮ জন। তৎমধ্যে ২২ হাজার ১৮৭ জন পুরুষ ও ২০ হাজার ৪১১ জন মহিলা ভোটার। উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দেয় উখিয়া উপজেলার ভোটাররা। তারা এই নতুন পদ্ধতিটা ঠিকঠাক গ্রহণ করতে পারবে কি না তা নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল আমাদের মাঝে । আগের দুই ধাপের তুলনায় এ উপজেলায় বেশি ভোট কাস্টিং (৪৫ শতাংশ) হওয়াতে আমরা বলতেই পারি উখিয়াবাসী ইভিএম পদ্ধতিকে সাদরে গ্রহণ করেছে।

তিনি আরো বলেন, এই উপ-নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, শান্তিপূর্ণ হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও বজায় থাকবে, মানুষও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইভিএমে ভোট প্রদান করতে পারবে। মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, আমার ছোট ভাই জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর (বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) অসমাপ্ত কাজগুলো আমি সম্পন্ন করতে চাই। নির্বাচিত হয়ে ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত গড়ে তোলার পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়া, যাতায়াত ব্যবস্থা আরো উন্নত করাসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন করতে চান তিনি। ব্যালট পদ্ধতিতে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হেরে যাওয়ায় এবারেও ভোট কারচুপি ও ভোট ডাকাতির আশঙ্কায় ছিলেন সাদমান জামি চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা এবারে ইভিএম চেয়েছিলাম এবং সেটা পেয়েছি। যার কারণে এবার নির্বাচন অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইভিএম পদ্ধতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাদমান জামি চৌধুরী বলেন, ইভিএম দেওয়ায় পঞ্চাশ শতাংশ নিরাপদবোধ করছি। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসিটিভি স্থাপন করা হলে, ভোটারদের ভোট প্রদানে অবশিষ্ট পঞ্চাশ শতাংশ নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে তিনি জানান।

ফরিদুল আলম কন্ট্রাক্টর বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন আশা করছি। সকল ভোট কেন্দ্র সিসি ক্যামরার আওতায় রাখার দাবি জানাচ্ছি। রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদকে দুর্নীতি ও দালালমুক্ত করার লক্ষ্যে তিনি প্রার্থী হয়েছেন বলে দাবি করেন। মকবুল হোসাইন মিথুন বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের নেতৃত্ব দরকার। এই নির্বাচনে আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, হবে, সেটা আমি জানি। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আমি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব। ২৭ জুলাই মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।