দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু সিরাজগঞ্জের মেরিনা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চিঠি পেলেন
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ওয়াপদা বাঁধ এলাকার মেরিনা খাতুনকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চিঠি দিয়েছেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। তিনি ওই বাঁধ এলাকার অসহায় ওমর আলীর স্ত্রী। গতকাল রোববার সকালে তাড়াশ পোস্ট মাস্টার আইয়ুব আলীর কাছে থেকে তিনি এ চিঠি গ্রহণ করেছেন। দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চিঠি পেয়ে তিনি আনন্দিত। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৮৯তম সভায় তাড়াশের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পাওয়া বীরাঙ্গনা পচি বেওয়ার মেয়ে মেরিনা খাতুনকে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ গৃহীত সিদ্ধান্ত জামুকার উপ-পরিচালক (উন্নয়ন) প্রথম রঞ্জন ঘটকের গত ৭ জুলাই স্বাক্ষরিত পত্র প্রদানের মাধ্যমে মেরিনা খাতুনকে অবহিত করা হয়। এ বিষয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে যুদ্ধশিশু মেরিনা সাংবাদিকদের বলেন, এ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চিঠি পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞ এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞ জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, আমার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে। আমার পারিবারিক অবস্থা খুবই খারাপ। তাদের তেমন প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। যুদ্ধশিশু হিসাবে সরকারের কাছে রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা দাবিও করেন তিনি। এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কামান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে মেরিনা খাতুন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়ায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের পক্ষে থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং তাকে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা দেয়ার দাবি জানান। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাড়াশের মৃত ফাজিল আকন্দের বিধবা স্ত্রী পচি বেওয়াকে স্থানীয় কয়েকজন রাজাকার হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেন। আর সেখানে হানাদার বাহিনীর সেনাদের কাছে পাশবিক নির্যাতন শিকার হন তিনি। এতে করে তিনি সন্তান সম্ভাবা হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে যুদ্ধশিশু মেরিনা খাতুনের জন্ম হয়। পরে ২০২২ সালে ৮ সেপ্টেম্বর বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত পচি বেওয়ার মেয়ে মেরিনা খাতুন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন পাঠান। এ আবেদনে মেরিনা খাতুন উল্লেখ করেন, তার মা পচি বেওয়াকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। যার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর ২০৫। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়েছিলেন।