কোটা আন্দোলকে কেন্দ্র করে পাশাক খাতের ক্ষতি অন্তত চার হাজার ৭০০ কোটি টাকা, এমন দাবি করেছে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। তবে রপ্তানিকারকরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতি হবে আরো বেশি। গার্মেন্টস ব্যবসায়িরা বলেন, সুযোগ বুঝে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো চাইতে পারে ডিসকাউন্ট বা মূল্যছাড়, কমাতে পারে ক্রয়াদেশও।
অন্যদিকে ঠিক সময়ে গন্তব্যে পণ্য পাঠাতে বেশি ভাড়ায় নিতে হবে আকাশ পথের আশ্রয়, কাজও করতে হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময়। সহিংসতা এবং কারফিউতে বন্ধ ছিলো সরকারি ও বেসরকারি অফিসসহ বেশিরভাগ শিল্প কারখানা। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বাণিজ্যের জন্যও বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলো বাংলাদেশ। বিভিন্ন বন্দর দিয়ে পণ্য ওঠানামাও ছিলো বন্ধ। বাঁধন ফ্যাশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মনির জানান, এগুলোর প্রভাবে কাঁচামাল আমদানি থেকে শুরু করে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি সব কিছুই ছিলো স্থবির, ক্ষতির পরিমাণও বড়। কয়েকবার রপ্তানি ট্রফি পাওয়া রপ্তানিকারক স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম খালেদ বলছেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ক্রয়াদেশ গ্রহণ এবং তৈরি পণ্য জাহাজীকরণ করা যায়নি। পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট এসএম মান্নান কচি বলছেন, প্রতিদিন রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস খাতে উৎপাদনের গড় মূল্য প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গেলো পাঁচ দিনে এ শিল্পের সহযোগী খাত মিলিয়ে ক্ষতি প্রায় পৌনে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। তবে সব চেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে দেশের ভাবমূর্তির। কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় ডিএনসিসির ক্ষতি ২০০ কোটি।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষক শাহজাহান সিদ্দিকী বলছেন, বিশ্বায়নের যুগে যোগাযোগ এবং বাণিজ্যের অন্যতম মাধ্যম ইন্টারনেট। সপ্তাহব্যাপী ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যবসায়িক ক্ষতির পাশাপাশি দেশের ইমেজও নষ্ট হয়েছে যা অপূরণীয়।
বিশ্বে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় এবং দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশ আসে এ খাত থেকেই, প্রতি মাসে গড় আয় তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি।